শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তিন বছরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি বিএনপি

দিনাজপুরে বিএনপির গ্রুপিং, কোন্দল আর সমন্বয়হীনতার কারণে জেলা নেতারা তৃণমূল বিএনপি কর্মীদের কাছ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া মামলার ভয়েও অনেকে প্রকাশ্যে বিএনপির কোনো অনুষ্ঠানে আসছেন না। সব মিলিয়ে তৃণমূলে বিরাজ করছে গভীর হতাশা। ভেঙে পড়েছে সংগঠকদের মনোবল।

দলীয় অনেকেরই অভিযোগ, দিনাজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রায় ৩ বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি হয়নি। নেতারা এ ব্যাপারে দৃষ্টি দিচ্ছেন না। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে। দলীয় সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির ২২টি ইউনিটের মধ্যে ৬টি ইউনিটের এখনো কাউন্সিল হয়নি। আবার যেগুলোর কাউন্সিল হয়েছে সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের জেলা কমিটি গঠিত হলেও এর মধ্যে বিতর্কিতরা জায়গা করে নিয়েছেন। এ নিয়ে তৃণমূলে বিরাজ করছে প্রচ- ক্ষোভ। অন্যদিকে ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের আজও কাউন্সিল হয়নি। অভিযোগ অনুযায়ী, দলের এ অবস্থার কারণে ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। কেন্দ্র এখানে হস্তক্ষেপ না করলে দিনাজপুরে দলের কার্যক্রম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে বলে তৃণমূল বিএনপি নেতা-কর্মীরা জানান। তাদের আক্ষেপ, এক সময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই জেলা আজ নেতৃত্ব সংকটে। জেলার সীমানা ছাড়িয়ে কোন্দল ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলা পর্যায়ে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আশঙ্কা, গ্রুপিং আর দ্বন্দ্ব নিরসন করে দলকে শক্তিশালী করা না গেলে ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।

অনেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে ব্যর্থ উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের হতাশা কাটাতে শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি না থাকায়  বেশিরভাগ নেতা-কর্মী দলীয় কার্যালয়মুখী হচ্ছেন না। কাউন্সিল নিয়ে নানা মতও রয়েছে। তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মী মন্তব্য করেছেন, এ সময় জেলা বিএনপির কাউন্সিল হলে সঠিক নেতৃত্ব আসার সম্ভাবনা কম এবং অযোগ্য ব্যক্তিরা নেতৃত্বে চলে আসবে। তারা মনে করেন, কেন্দ্র থেকে কমিটি দিলেই বরং দলের জন্য নিবেদিত ব্যক্তিরা নেত্বতে আসতে পারবেন। দলকে জাগিয়ে তুলতে একটি নেতৃত্ব নির্ভর জেলা কমিটি দরকার। এই মতের বিপরীতে যারা রয়েছেন তাদের বক্তব্য হলো, দলের আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই দল চলুক।

৮ মামলার আসামি ও সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন বলেন, পুলিশের হামলা, মামলা আর বাধার কারণে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। দলের কার্যালয়ে কিংবা বাইরে কোনো দলীয় কার্যক্রম করলেই বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তার পরেও দলের কেন্দ্রীয় কার্যক্রমগুলো পালন করে যাচ্ছে জেলা বিএনপি। তিনি বলেন, গ্রুপিং-লবিং একটা বড় দলে থাকতেই পারে। এরপরেও আমরা সাংগঠনিক বিষয়ে সবাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে দলের কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছি। জেলায় বিএনপির ১৩টি থানা ও ৯টি পৌরসভা মিলে ২২টি ইউনিট রয়েছে। যদিও ২২টি ইউনিটের মধ্যে ৬টি ইউনিটের কাউন্সিল হয়নি। এগুলোর কাউন্সিল শিগগিরই হবে।

সর্বশেষ খবর