শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিয়ন্ত্রণে আসছে না বেপরোয়া ড্রাইভিং

মাহবুব মমতাজী

নিয়ন্ত্রণে আসছে না বেপরোয়া ড্রাইভিং

কোনোভাবেই শৃঙ্খলায় আনা যাচ্ছে না রাজধানীর গণপরিবহনকে। বাস স্টপেজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া ছাড়াও সড়কে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা বন্ধে করে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট লাইন। এরপরও ঠেকানো যাচ্ছে না বেপরোয়া ড্রাইভিং। এ অবস্থায় আইন অমান্যকারী বাস কোম্পানি, মালিক ও বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, এমন পরিস্থিতিতে সচেতনতার বিকল্প নেই।

সরেজমিন রামপুরা, বাড্ডা, নতুনবাজার, নর্দ্দা, মুগদা, শান্তিনগর ও মৎস্য ভবন ঘুরে দেখা গেছে, গোটা শহরটাই যেন বাস স্টপেজ। যেখানে-সেখানে গাড়ি ইচ্ছামতো থামছে, যাত্রীরাও উঠছেন খেয়াল খুশিমতো। আবার যাত্রীছাউনি থাকলেও তা উপেক্ষা করেই দাঁড়িয়ে থাকেন যাত্রীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর প্রতিটি সিটি স্টপেজ এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে সেখানে বাস দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা যায়। এটি করা গেলে সেখান থেকেই বাসে চড়তে বাধ্য হবেন যাত্রীরা। প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরা অথবা পুলিশ চেকপোস্ট বসাতে হবে। তাহলে অন্তত বিশৃঙ্খলভাবে যাত্রী ওঠানামার কারণে সড়কে আর কোনো তাজাপ্রাণ ঝরবে না। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ থেকে জানা গেছে, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে তারা বে পদ্ধতি চালু করেছে। তবে দেড় শতাধিক সিটি বাস স্টপেজ হলেও বে করা হয়েছে অল্প কয়েকটি ট্রানজেকশনে। আর যাত্রীরা যাতে সুবিধা পান সেজন্য প্লাস্টিক কন দিয়ে লেন করে দেওয়া হয়েছে। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ এ প্রতিবেদককে বলেন, বেপরোয়া ড্রাইভিং নিয়ন্ত্রণে আনতে চালকদের বেতনভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে, বাস-বে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, বাস-বে ছাড়া সার্বক্ষণিক বাসের দরজা বন্ধ রাখতে হবে। এ ছাড়া যে বাস বেপরোয়াভাবে চলবে সেটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আড়িফেরি গান দিয়ে দূর থেকে তার সব তথ্য নিয়েই মামলা দিয়ে দেওয়া সম্ভব। যে বাস নিয়ম মানবে না তা মালিককে জানাতে হবে এবং এরপর মালিক কী পদক্ষেপ নিলেন তা ট্রাফিক পুলিশকে জানাতে হবে। একইসঙ্গে যাত্রীদেরও সচেতন করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গত ১৫ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ থেকে জানা গেছে, ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন পথচারীরা। এসব দুর্ঘটনার ৯১ শতাংশই ঘটে দ্রুত গতিতে বেপরোয়া যানবাহন চালানোর কারণে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ঢাকার সড়কে নানাবিধ কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে চালকের অদক্ষতা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি তো আছেই। এগুলো কমিয়ে আনার জন্য সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে বিভিন্ন পক্ষ কাজ শুরু করেছে, আমরাও করেছি। সমন্বিত বাস্তবায়নে সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট অনেকটাই কমে আসবে। বাসগুলো ফুটপাথ ঘেঁষে দাঁড়াবে। সিএনজি ও অটোরিকশা এর মধ্যে থাকবে না।

সর্বশেষ খবর