শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
রিফাত হত্যা মামলা

শিশু আসামিদের হাতকড়া পরানোয় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে ১৪ জনকে শিশু দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও একমাত্র রাতুল সিকদারকে গ্রেফতারের দুই দিন পর যশোর শিশু কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃত ৬ শিশুকে সংশোধনাগারে না পাঠিয়ে তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এই শিশুদের হাতকড়া পরিয়ে আদালতে হাজির করায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ২৪ জুলাই গ্রেফতারকৃত বরগুনা জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান শ্রাবণের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা কাদের আদালতে শ্রাবণ শিশু এই মর্মে তার জন্ম সনদ ও প্রত্যয়নপত্র জমা দিলে আদালত সেগুলো নথিভুক্ত করার আদেশ দেয়। বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, শিশু আইনের ৪৪/৩ ধারায় বলা হয়েছে, গ্রেফতার করিবার পর কোনো শিশুকে হাতকড়া বা কোমরে দড়ি বা রশি লাগানো যাবে না। ৪৭ এর (১) ধারায় বলা হয়েছে জবানবন্দি গ্রহণের সময় শিশুর মাতা ও পিতা বা তাদের অবর্তমানে তত্ত্বাবধায়নকারী অভিভাবক বা কর্তৃপক্ষ বা আইনানুগ বৈধ অভিভাবক এবং প্রবেশন কর্মকর্তা বা সমাজকর্মীর উপস্থিতিতে সতর্কতার সঙ্গে শিশুর জবানবন্দি গ্রহণ করিতে হইবে। রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত কোনো শিশুর ক্ষেত্রেই শিশু অধিকার আইনের এসব ধারা পুলিশ মানেনি। শিশুদের হাতকড়া পরিয়ে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এ ব্যাপারে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, অপরাধী হিসেবে শিশুকে কোনোভাবেই হাতকড়া পরানো কিংবা দড়ি বা রশি লাগানো যাবে না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠক সংকল্প ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক মির্জা খালেদ বলেন, শিশু আইনে ২০১৩-তে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে ১৮ বছরের নিচে কোনো শিশু অপরাধে জড়িয়ে পড়লে তাকে সমাজসেবা বিভাগের প্রবেশনাল কর্মকর্তার হেফাজতে দিতে হবে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে বাবা মা প্রবেশনাল কর্মকর্তা কিংবা বৈধ অভিভাবকের উপস্থিতি থাকতে হবে। এক্ষেত্রে এ আইন লঙ্ঘিত হলে প্রতিকার চাওয়ার অধিকার শিশুর অভিভাবকদের রয়েছে। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, অন্য শিশুদের শারীরিক গঠন দেখে শিশু মনে না হওয়ায় বয়স যাচাই বাছাই করতে সময় লেগেছে। যখন শিশু হিসেবে নিশ্চিত হওয়া গেছে তখন আদালতকে অবহিত করেছি। অভিযোগপত্র দাখিলের পরেও শিশুদের হাতকড়া পরানোর বিষয়ে তিনি বলেন, যখন নিশ্চিত হয়েছি তখন আদালতে জানিয়েছি। কারা কর্তৃপক্ষ না জানার কারণেই হয়তো হাতকড়া পরানো অবস্থায় আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর