মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঝিনাইদহে পার্ক ভেঙে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেট

ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহে পার্ক ভেঙে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেট

ঝিনাইদহ পৌরসভার একমাত্র পার্কটি ভেঙে মার্কেট বানানো হচ্ছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঝিনাইদহ পৌরসভার পাশে অবস্থিত ৫৮ বছরের পুরনো একমাত্র শিশু পার্কটি ভেঙে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল মার্কেট। বুলডোজার দিয়ে পার্কের সব রাইড, গাছপালা, ডা. কে আহম্মেদ কমিউনিটি সেন্টার ও পার্কের মধ্যে থাকা পাঁচ দশকের পুরনো শহীদ মিনারটি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী। শিশু পার্কটি রক্ষায় গঠিত ‘শিশু পার্ক রক্ষা সমন্বয় পরিষদ’ একাধিকবার মানববন্ধন করেছে। পার্কটি রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। ঝিনাইদহ শহর কেন্দ্রে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়কে ১৯৬১ সালে ২ একর ১৮ শতক জমির ওপর পার্কটি নির্মাণ করেন তৎকালীন ঝিনাইদহ সাবডিভিশনাল অফিসার (এসডিও) কে এম রব্বানী। পরে তিনি ১৯৬৩ সালে ঝিনাইদহ টাউন কমিটিকে শর্ত সাপেক্ষে পার্কটির পরিচালনার দায়িত্ব দেন। শর্তে বলা হয়, পার্কটি শুধু পাবলিক পার্ক হিসেবে ব্যবহার ও উন্নয়ন করা যাবে। তবে পার্কের উন্নয়ন ছাড়া কোনো পাকা স্থাপনা করা যাবে না এবং এ সম্পত্তি বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যাবে না। শর্ত না মানলে ঝিনাইদহ ডেভেলপমেন্ট কমিটি পার্কের সম্পত্তি দখল নিতে পারবে। এসব শর্ত ভেঙে সেখানে বহুতল মার্কেট করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ’৭২ সালের পর এখানে পার্কের অস্তিত্ব ছিল না। শহীদ মিনারটি ভাঙা হলেও সেটা মুজিবনগর সড়কে আরও বড় করে নির্মিত হয়েছে। এখানে পৌরসভার ভবন, গ্যারেজ, কমিউনিটি সেন্টার ছিল। সেগুলো ভেঙে মার্কেট করছি। তিনি বলেন, শিশুদের খেলার জায়গা অনেক আছে। পৌরসভার কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। একটা আধুনিক শপিং মল হলে পৌরসভার আয় বাড়বে। এই ভালোটা কারও সহ্য হচ্ছে না। স্থানীয়রা বলছেন, পার্কটি ছিল পৌরবাসীর একমাত্র বিনোদনের জায়গা। সব গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৯৭৮ সালে পার্কের পাশে প্রথম পৌর মার্কেট গড়ে দোকান ভাড়া দেন তৎকালীন চেয়ারম্যান আমির হোসেন। পরে আনিছুর রহমান চেয়ারম্যান হয়ে দোকান আরও বাড়ান ও অগ্রিম টাকা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বরাদ্দ দেন। গড়ে তোলা হয় কমিউনিটি সেন্টার, গ্যারেজসহ বিভিন্ন স্থাপনা। তারপরও শিশুদের জন্য খেলার জায়গা ছিল। শিশুদের পার্ক ভেঙে মার্কেট করার উদ্যোগে পৌরসভার নাগরিকরা ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌর কাউন্সিলর জানান, বিদেশি দাতা সংস্থার অর্থায়নে শহরের একমাত্র পার্ক ভেঙে ১০ তলা মার্কেট করা হবে।

সর্বশেষ খবর