মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদক্ষেপের প্রশংসা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির

রফিকুল ইসলাম রনি, গুইচৌ, চীন থেকে

বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)। গতকাল চীনের গুইচৌ প্রদেশের চোনি শহরে সিপিসি স্কুলে সফররত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল ও সিপিসি নেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ প্রশংসা করা হয়। সেমিনারে সিপিসি নেতারা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং গৃহীত চীনের দারিদ্র্য বিমোচনে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন উদ্যোগ ব্যাখ্যা করেন। পরে দুই পক্ষের নেতারাই পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ে দুই দেশের দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে বলে মত প্রকাশ করেন। সিপিবি নেতাদের বক্তব্যে এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতা ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আমাদের সরকারের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অন্যতম লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে দারিদ্র্য বিমোচনে বেশ কিছু আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ করে এবং বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে। এসব পদক্ষেপের ফলে গত ১০ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪০ থেকে ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’। এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী ৭০ শতাংশ মানুষের উন্নয়ন করা। ক্ষুদ্র ঋণ নয়, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। এনজিওদের প্রতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নিজস্ব অর্থে আত্মনির্ভরশীল এবং মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই লক্ষ্য। আবদুল মতিন খসরু আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে, এ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাস পাবে। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। এর আগে সিপিসির পক্ষ থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ঘোষিত দারিদ্র্য বিমোচনের একটি মডেল উপস্থাপন করা হয়। তারা বলেন, মিস্টার শি জিন পিংয়ের দারিদ্র্য বিমোচনের কর্মসূচির ৬টি প্রধান দিকনির্দেশনা রয়েছে। এর প্রথমটি হচ্ছে, কে দরিদ্র এবং কেন দরিদ্র তা খুঁজে বের করা। এজন্য দারিদ্র্যকবলিত এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে সরকার ও দলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করেন। এসব পদক্ষেপের ফলে চীনের দারিদ্র্যের সংখ্যা নেমে এসেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশের নিচে। সিপিসি আশা করে, ২০২০ সালের মধ্যে চীন সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সিপিসি নেতাদের পারস্পরিক প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলের নেতা আবদুল মতিন খসরু ছাড়াও প্রশ্ন করেন দীপঙ্কর তালুকদার, আমিনুল ইসলাম আমিন, আজমতউল্লা খান, এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার, কামাল চৌধুরী, সেলিম মাহমুদ প্রমুখ। সিপিসির পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন লিং হোন, সি ইউপো, সিএ ইউ চৌ, ইয়ান চেন ইউ, জং ইউ লান প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর