শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সংকটে চার শতাধিক গার্মেন্ট

৪৬ পোশাক কারখানা বন্ধ ♦ ২৫ হাজার ৪৫৩ জন চাকরি হারিয়েছেন

রুহুল আমিন রাসেল

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্পের ৪ শতাধিক কারখানা ভয়াবহ সংকটে থাকার কথা জানিয়েছে বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে। গত কয়েক মাসে ৪৬টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৪৫৩ জন শ্রমিক। গত এক বছরে অর্ডার অনেক কমেছে। বড় কারখানাগুলোয় সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ কম থাকার তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ।

পোশাকশিল্পের মালিকরা কয়েক বছর ধরে যেভাবে কারখানা সম্প্রসারণ করেছেন, সেভাবে তাদের পণ্য বাজারজাতকরণের জন্য মার্কেটিং করেননি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ইউরোপে অগ্রাধিকার বাজার সুবিধা বা জিএসপি পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হওয়ায় ২০২৪ সালে এই জিএসপি সুবিধা হারাবে। এজন্য এখনই প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার হলেও তা দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করেন পোশাকশিল্প মালিকরা।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘গত কয়েক মাসে ৪৬টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ২৫ হাজার ৪৫৩ জন শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। কমপ্লায়েন্সের চাপে ৪ শতাধিক পোশাক কারখানার মালিক সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করছেন। একদিকে ক্রেতাদের চাপ, আরেকদিকে কমানো হচ্ছে পোশাকের মূল্য। এটা ভয়ঙ্কর বিপদ। মালিকরা এখন ১০ শতাংশ হারে কারখানার সক্ষমতা কমিয়ে আনছেন।

ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেইফটি ইন বাংলাদেশের (অ্যাকর্ড) একতরফা সিদ্ধান্তে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে অ্যাকর্ড আলোচনা ছাড়াই হাই কোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে কারখানাগুলোর ওপর নতুন শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। বিজিএমইএ সূত্র বলছে, বিগত ছয় বছরে অ্যাকর্ড ১ হাজার ৬০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২০০ প্রতিষ্ঠানকে পরিদর্শন সনদ দিয়েছে। গত ৮ মে থেকে তারা সময় বাড়িয়ে ২৮১ দিনের সময় নিয়েছে বাকি ১ হাজার ৪০০ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে। এটা কীভাবে সম্ভব? বিজিএমইএর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছাড়াই ৪০০ কারখানাকে সতর্ক (এক্সেলেটেড) করেছে অ্যাকর্ড। কারখানাগুলোর নকশা, বিল্ডিং সেইফটি, ফায়ার সেইফটির পরও টেস্টিংয়ে ফেল দেখানো হচ্ছে। এতে রপ্তানি আদেশ ও কারখানার ব্যবসা কমেছে। শ্রমিকরা চাকরি হারাচ্ছেন। অ্যাকর্ড ২০১৩ সালে কাজ শুরু করেছে। যে কাজটি তাদের পাঁচ বছর আগে করার কথা ছিল সেটি তারা এখন করছে। এটা ভয়ঙ্কর বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন পোশাকশিল্প মালিকরা।

সর্বশেষ খবর