সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
আজ থেকে খোলাবাজারে বিক্রি

সিন্ডিকেটের কব্জায় পিয়াজ, কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা

মানিক মুনতাসির

সিন্ডিকেটের কব্জায় পিয়াজ, কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা

ভারত পিয়াজের রপ্তানিমূল্য বাড়িয়েছে এমন ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। এক দিন আগে ৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পিয়াজ গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বেড়েছে রসুন ও আদার দামও। গতকাল প্রতি কেজি পিয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকা পর্যন্ত। আদা বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজিতে। অথচ প্রতি কেজি আদা এক সপ্তাহ আগেও ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ টাকা। দাম বাড়ার পেছনে একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ীর কারসাজি রয়েছে বলে মনে করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ভারতের স্থানীয় বাজারে পিয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটির সরকার রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই বাড়ন্ত দামের পিয়াজ বাংলাদেশে আসতে এখনো অন্তত আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। অথচ শুক্রবার ঘোষণা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বাংলাদেশের পাইকারি পিয়াজ ব্যবসায়ীরা পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে খুচরা বাজারে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে ৭০ টাকার নিচে আর পিয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে একটা বড় ধরনের সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে মনে করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করেন, একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া পাইকারি বাজারটাও নিয়ন্ত্রণ করছে এই সিন্ডিকেট। পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও নিয়ন্ত্রণে আনতে গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, টিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মন্ত্রীর দফতরের একটি সূত্র জানায়, গতকাল দিনভর তিনি এসব নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এমনকি সন্ধ্যার পর সচিবালয়ে মন্ত্রীর দফতরে ফোন করা হলে জানানো হয়, তিনি বৈঠকে রয়েছেন। জানা গেছে, নিজেদের বাজার সামাল দিতে পিয়াজ রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার বেঁধে দিয়েছে ভারত। বাড়ন্ত এই দামে পিয়াজ আমদানি করলে প্রতি কেজির আমদানি মূল্য দাঁড়াবে ৭০-৭২ টাকা। তবে সেটি আমদানি হওয়ার পর। বর্তমানে বাজারে যেসব পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে সেগুলো অন্তত তিন মাস আগে আমদানি করা। কেননা আমদানির জন্য এলসি খোলার অন্তত ১৪ থেকে ২১ দিন পর ওই এলসি নিষ্পত্তি হয়। পণ্য আসতে সময় লাগে আরও কয়েক দিন। ফলে ভারত বাড়ন্ত রপ্তানিমূল্য কার্যকর করলেও বাংলাদেশের বাজারে এখনই এর প্রভাব পড়ার কথা নয়। এখানে একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও তারা অধিক মুনাফার লোভে ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিবছর সারা দেশে ৩৫-৪০ লাখ টন পিয়াজের চাহিদা রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা। তারা মনে করেন, প্রতিবছর চাহিদার ৬০-৭০ শতাংশ পিয়াজ দেশেই উৎপাদিত হয়। বাকিটা আমদানি করা হয়।

আজ থেকে খোলাবাজারে পিয়াজ বিক্রি করবে টিসিবি : পিয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে ট্রাকসেলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ ছাড়া পিয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার কমানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে এবং বন্দরে আমদানিকৃত পিয়াজের খালাস প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য কাস্টমসসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষকেও চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সর্বশেষ খবর