জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী  রেজাউল করিম রাজু প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এদিকে গতকাল বিকালে প্রত্যাহারের আগে নগরীর কাচারি বাজারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এখন এ আসনে লড়াইয়ের জন্য মাঠে থাকলেন ৬ জন।

বিকাল সোয়া ৪টায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু। পরে তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। প্রত্যাহার শেষে অ্যাডভোকেট রাজু সাংবাদিকদের বলেন, রংপুরের লাখো নেতা-কর্মীর হতাশার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং দলীয় সিদ্ধান্তের আলোকে আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। এখানে মহাজোটগতভাবে নির্বাচন হবে।

রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন জানান, মোট ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে ৯ জন জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে বাছাইয়ে বাতিল হয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক। শেষ দিনে প্রত্যাহার করলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু। এখন মাঠে বৈধ প্রার্থী থাকলেন ৬ জন। তারা হলেনÑ মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির রাহগীর আল মাহী সাদ এরশাদ, বিএনপির রিটা রহমান, স্বতন্ত্র এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, এনপিপির শফিউল আলম,   খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান ম ল রাজু, গণফ্রন্টের কাজী মো, শহীদুল্লাহ।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই রংপুর-৩ সদর আসনের এমপি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত ১ সেপ্টেম্বর আসনটিতে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ অক্টোবর এখানে ভোট গ্রহণ হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। এজন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয় ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বাছাই হয় ১১ সেপ্টেম্বর। প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ সেপ্টেম্বর। রংপুর সদর উপজেলা এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ১-৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া বাকি এলাকা নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৩ জন। এই আসনে ভোট কেন্দ্র ১৭৫টি, ভোটকক্ষ ৯১০টি।

সড়ক অবরোধ : রংপুর সদর আসনের উপনির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিমের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মহাজোটের দিক বিবেচনা করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলেন। এরপর থেকে রংপুর নগরীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বহাল রাখার দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

রংপুর মহানগর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুজ্জামান শাহীন বলেন, আমরা রাজনীতি করে আজ হতাশ। রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও রংপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার কথায় আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। তবে হতাশ রংপুরের লাখো নেতা-কর্মী।’