বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
৯ হাজার কোটি টাকার আট প্রকল্প অনুমোদন

ক্যান্সার হাসপাতাল হবে প্রতি বিভাগে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা পাওয়া সহজ করতে প্রতিটি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনসহ ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্পে ব্যয় হবে ৮ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সরকারি প্রকল্পের পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজার যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কারও যদি ক্যান্সার হয়, তা শুরুতেই যেন নির্ণয় করা যায় এবং সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়, সে উদ্দেশ্যেই এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ক্যান্সার চিকিৎসায় বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ও এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান তিনি। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে প্রতি ১০ লাখ লোকের জন্য একটি করে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রয়োজন। সে হিসাবে ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে ১৬০টি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতালের প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী মান্নান।

এদিকে প্রকল্পের যে কোনো পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজার যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একনেকের সভায় বিভিন্ন প্রকল্পের পণ্য কেনাকাটার ক্ষেত্রে উচ্চমূল্য নির্ধারণের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাজার যাচাই করে দাম নির্ধারণের নির্দেশ দেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, রাস্তাঘাট প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনেরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, রাস্তার পাশে গরিব মানুষের বাড়ি ও গ্রাম যাতে ভেঙে ফেলা না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের ঝাড়খ  থেকে বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে, সেটি দিয়ে শুধু যে বিদ্যুৎ আমদানি হবে তা নয়, ভবিষ্যতে হয়তো আমরা রপ্তানি করতে পারব।

একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো : ‘ময়মনসিংহ (রঘুরামপুর)-ফুলপুর-নকলা-শেরপুর (আর-৩৭১) আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প। ব্যয় ৮৫৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ‘রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়কের বিন্দুর মোড় থেকে বিমানবন্দর হয়ে নওহাটা ব্রিজ পর্যন্ত পেভমেন্ট চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৩২৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ‘রাজশাহী মহানগরীর উপশহর মোড় থেকে সোনাদীঘি মোড় এবং মালোপাড়া মোড় থেকে সাগরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প। ব্যয় ১২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ‘আশ্রয়ণ-২ শীর্ষক’ প্রকল্প। ব্যয় ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ‘জুনোসিস এবং আন্তসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা’ প্রকল্প। ব্যয় ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ‘স্ট্রেংদেনিং মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন ক্যাপাবিলিটিজ অব আইএমইডি (এসএমইসিআই)’ প্রকল্প। ব্যয় হবে ৬৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ‘ভারতের ঝাড়খ  থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি করার লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে মনাকষা সীমান্ত পর্যন্ত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ’ প্রকল্প। ব্যয় হবে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

শেখ হাসিনার ৩৭টি পদক লাভ : ড. কালাম স্মৃতি ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ অর্জনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক পদকের সংখ্যা ৩৭-এ উন্নীত হলো। সোমবার ড. কালাম স্মৃতি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাম্বাসাডর টি পি শ্রীনিবাসন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ পদক হস্তান্তর করেন। গত মার্চে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাইফটাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করা হয়। বার্লিনে ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান উইমেন প্রদত্ত এ পদক গ্রহণ করেন জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র সমুন্নত ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন পর্যায়ের পদক প্রদান করে।

সর্বশেষ খবর