শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এক সময়ের দুর্গে বিএনপি এখন নির্জীব

চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আসন বগুড়া-৬ (সদর) রক্ষা হলেও নিজ দুর্গে এখন শক্তিহীন বিএনপি। দিন যাচ্ছে, আর যেন ক্ষয়ে যাচ্ছে বিএনপির শক্তি ও সমর্থন। ফলে আগের মতো আর দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের পদচারণা নেই। নেতা-কর্মীরা অনেকটাই গা বাঁচিয়ে চলছেন। এ কারণে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মাত্র কয়েক গজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে মিছিল, মিটিং আর খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছেন নেতা-কর্মীরা। জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির দুর্গে বিএনপি কোণঠাসা

হয়ে পড়েছে। নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে তারেক রহমান যুগের পর ভিপি সাইফুল ইসলামের যুগেরও অবসান হয়েছে। শুরু হয়েছে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের যুগ। তারপরও দিনকাল ভালো যাচ্ছে না বিএনপির। দলীয় কার্যলয়ে সিনিয়র নেতারা তেমন আসেন না। দলীয় কিছু কার্যক্রমের পাশাপাশি সিনিয়ররা বসেন সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদারের বাসভবনে। দীর্ঘদিন ধরে মামলা-হামলায় নির্জীব নেতা-কর্মীরা। জানা গেছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বলে এক সময় বগুড়াকে বিএনপির দুর্গ বা ঘাঁটি বলা হতো। সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার সাতটি আসনেই বিএনপির জয়জয়কার ছিল। কিন্তু তারেক রহমানের হাতে গড়া বগুড়া বিএনপি ওয়ান ইলেভেনের পর নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। তারপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। দলীয় সূত্র মতে, তারেক রহমানের ইশারায় বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন ভিপি সাইফুল ইসলাম। সর্বশেষ জেলা কমিটি গঠিত হয় ২০১১ সালের এপ্রিলে। তাতে সাইফুল ইসলাম সভাপতি এবং জয়নাল আবেদীনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। পরে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ১৭২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়। দুই বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা থাকলেও তা আজও হয়নি। জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ বিরোধে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম থমকে আছে। তৃণমূল থেকে বিএনপি পুনর্গঠনের দাবি জোরালো হলেও সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তবে চলতি বছরের ১৫ মে ৩১ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে আহ্বায়ক মনোনীত করা হয়। তিনি ধুনট ও শেরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া-৫ আসনে একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। সর্বশেষ বেগম খালেদা জিয়ার বগুড়া-৬ সদর আসন থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসনটির মান ধরে রেখেছেন। এ আসনে সিরাজ জয়ী হলেও ভোট পেয়েছেন মাত্র ৮৯ হাজার ৭৪২টি। ঠিক এর তিন মাস আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভোট পান সোয়া ২ লাখ। এ আসন থেকে খালেদা জিয়া বরাবরই আরও বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এ অবস্থায় দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে-  বিএনপির বাকি ভোট গেল কোথায়? বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে প্রার্থী সিরাজ গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন। দলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ দাবি করেন, বিগত দিনের চেয়ে বগুড়ায় বিএনপির শক্তি এখন অনেক বেড়েছে। দলকে সুসংগঠিত করার কাজ চলছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। বিএনপির ঘাঁটি কথাটি আগামীতেও অক্ষুণ্ন থাকবে।

সর্বশেষ খবর