বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

উত্তাল বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। গতকাল ষষ্ঠ দিনের মতো বিরতিহীনভাবে এ আন্দোলনে অংশ নেন হাজারো শিক্ষার্থী। সকালে প্রতিদিনের মতো প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে আন্দোলনে যোগ দেন। সারা দিন থেমে থেমে বৃষ্টি আন্দোলনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল বেলা ১১টার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিং করে বলেছেন, ‘অনিয়ম, দুর্নীতি,  স্বৈরাচারী কায়দায় এই খোন্দকার নাসিরউদ্দিন মুক্তমনা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রেখে শিক্ষার পরিবেশ তীব্রভাবে কলুষিত করে যাচ্ছেন। এতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ছি।’ প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘সবাই আজ জেগেছে, সবাই শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ চায়। আর এই ভিসি নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগই এর একমাত্র সমাধান। তাই আমাদের এক দফা এক দাবি, এই ভিসির পদত্যাগ।’ প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এমএসসি গণিত বিভাগের ছাত্র মো. আল গালিব। এ সময় আইন বিভাগের ছাত্র শফিকুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আল রাফি, নাহিদ মোল্লা, লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্রী রেহেনুমা তাবাসুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও কর্তব্যরত ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল দুপুরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে ক্যাম্পাস সাংবাদিক সমিতি। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আবদুর রহিম খান তদন্তকাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে নোটিস দিয়েছেন। নোটিসে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অথবা উপযুক্ত তথ্য প্রদান করতে পারে এমন ব্যক্তিদের তথ্য দুই দিনের মধ্যে প্রদান করে তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতার অনুরোধ করা হচ্ছে। তবে এটিকে অযৌক্তিক আন্দোলন আখ্যায়িত করে ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের যেসব দাবি ছিল সেগুলো ইতিমধ্যে মেনে নেওয়া হয়েছে।

 এটি একটি সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে কোনো সেশনজট নেই।এখানে প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ করা হয় এবং ১ জানুয়ারি ক্লাস শুরু করা হয়। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নামে নিজেদের ক্ষতি করছে। এক সময় এখানে মাদকের ব্যবহার ছিল।

আমি আসার পর মাদকমুক্ত করেছি।’ অন্যদিকে নিরাপত্তা চেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদত্যাগকারী সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ুন কবির। সোমবার রাতে তিনি এ সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘যে কোনো সময় ভিসিপন্থিরা ফেসবুক আইডির মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে আমার বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন।’ উল্লেখ্য, ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ডেইলি সান পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিসির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ খবর