ডেঙ্গু জ্বরসহ মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা জরুরি। মশক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সব কটি সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে ‘সমন্বিত মশা নিয়ন্ত্রণ গবেষণা কেন্দ্র’ স্থাপন প্রয়োজন। রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা ছাড়াও মশা নিয়ন্ত্রণে জৈবিক, পরিবেশগত ও যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে।
গতকাল ‘মশা নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিলে এসব সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড সম্মেলন কক্ষে এ গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়। কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় গোলটেবিলে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এপ্রিল মাস থেকে মশা ও জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণের জন্য সভা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সব কটি সংস্থার চেষ্টার পরও মশা দেশের মানুষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।’ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি সিন্ডিকেটকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন মশার ওষুধ আমদানি বন্ধ রাখা হয়। গুটিকয় কোম্পানি শুধু মশার ওষুধ আনতে পারত। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগ এ কাজ করেছে। ওই বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’স্বাগত বক্তব্যে কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ডেঙ্গুতে যতসংখ্যক রোগী আক্রান্ত হয়েছে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি ছিল না। এটা স্বল্পমেয়াদি বিষয় নয়। তাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে মশক কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘মশা সব সময় ছিল। চলতি বছর এত রোগী আক্রান্ত হবে তা ধারণা করা যায়নি।’ গোলটেবিলে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কীটতত্ত্ববিদ আধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জনস্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব পরামর্শক ড. মুশতাক হোসেন, কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর এ চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, ওরিয়ন ফার্মার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরিফ হোসেন, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাকিল আহম্মেদ, সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাঈনুল হাসান, বাংলাদেশ ডায়াগনস্টিক রিয়েজেন্ট অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম কামরুজ্জামান, বিআরবি হাসপাতালের সিইও মেজর ডা. এ কে এম মাহবুবুল হক (অব.), এসিআই কনজুমারস ব্র্যান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. আয়েশা আক্তার, ডেঙ্গুতে সন্তান হারানো বাবা মোহাম্মদ আফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।