সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
টিআইবির প্রতিবেদন

৭৩ শতাংশ জায়গায় বরাদ্দের তুলনায় ত্রাণ কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছর বন্যায় ত্রাণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, বৈষম্য ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের বন্যায় ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ৭৩ শতাংশ জায়গায় বরাদ্দের তুলনায় পরিমাণে কম দেওয়া হয়েছে। ৩২ শতাংশ জায়গায় স্বজনপ্রীতি ও ২৩ শতাংশ জায়গায় রাজনৈতিক বিবেচনায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। ফলে প্রকৃত দুস্থরা ত্রাণ পায়নি। এ ছাড়া ২৬ শতাংশ জায়গায় পরিবারের সদস্য সংখ্যা বিবেচনা না করে ত্রাণ বিতরণ হয়েছে। ১৭ শতাংশ জায়গায় তালিকায় না থাকলেও ত্রাণ পেয়েছেন। ১৭ শতাংশ জায়গায় ত্রাণ আত্মসাৎ হয়েছে। কোথাও পচা চাল দেওয়া হয়েছে। এমনকি ত্রাণের অর্থে মন্ত্রীসহ তার লোকজন বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। গতকাল টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বন্যা ২০১৯ মোকাবিলায় প্রস্তুতি এবং ত্রাণ কার্যক্রমে শুদ্ধাচার পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক ওই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন গবেষক মো. নেওয়াজুল মাওলা ও মো. মাহফুজুল হক। অপর তিন গবেষক অমিত সরকার, এস এম জুয়েল ও মো. জাকির হোসেন খান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের। টিআইবি জানায়, বন্যাপ্লাবিত ২৮টি জেলার মধ্যে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি জেলার ২০টি ইউনিয়নের ৬৮৩টি খানায় এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে বন্যায় ক্ষতির তুলনায় অপ্রতুল ত্রাণ বরাদ্দ, ত্রাণ বিতরণে বৈষম্য ছাড়াও নানা অব্যবস্থাপনা পাওয়া গেছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তাকে ত্রাণ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিক ক্ষতিগ্রস্তদের বাদ দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের স্বজন ও সমর্থকদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের বাদ দিয়ে একই পরিবারকে একাধিকবার ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে ২৮টি সুপারিশ করে টিআইবি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে বন্যা মোকাবিলায় সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গন এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে মডেল মনে করে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার অভাবে সরকার ও জনপ্রতিনিধিরা সক্ষমতা অনুযায়ী মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই অনেক দুস্থ ত্রাণ পায়নি, আবার যার প্রয়োজন নেই সে পেয়েছে। বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে পর্যাপ্ত ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়নি। বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) সরকার এবং নিজেদের সঙ্গে সমন্বয় ছিল না। এনজিওগুলো নিজেদের সুবিধাভোগীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে। এ ছাড়া মন্ত্রী দুর্যোগপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করবেন এটা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ এবং তাদের কর্তব্য। ত্রাণের বরাদ্দ থেকে মন্ত্রীর খরচ ধরা নিয়মবহির্ভূত।

সর্বশেষ খবর