মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে ও পদ্মা সেতুর সঙ্গে মিলবে আউটার রিং রোড

মানিক মুনতাসির

ঢাকার অভ্যন্তরের যানজট কমাতে ও ঢাকার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর যাতায়াত সহজ করতে রাজধানীর চারপাশে আউটার রিং রোড (চক্রাকার সড়ক) নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সড়কটি সরাসরি যুক্ত হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের সঙ্গে। এতে একদিকে ঢাকার যানজট কমবে, অন্যদিকে ঢাকার সঙ্গে পার্শ¦বর্তী জেলাগুলোর যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক সহজ হবে বলে মনে করে সরকার। এই সড়ক ব্যবহার করে যাত্রীরা ঢাকার ভিতরে না ঢুকেই অন্য জেলাগুলোতে যাতায়াত করতে পারবেন। যাত্রীবাহী বাসের চেয়ে মালবাহী গাড়িগুলোর জন্য এই চক্রাকার সড়ক বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে সরকার। ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী জানুয়ারিতেই প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে চক্রাকার সড়কের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১৩৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রথম ফেজে নতুন করে ৪৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও অর্থায়নকারী হিসেবে জাপানকে বেছে নিয়েছে সরকার। তবে পরবর্তী সময়ে চাইলে অন্য কোনো দেশ বা সংস্থাকে কো-ফাইন্যান্সর হিসেবে নিতে পারবে জাপান। চক্রাকার সড়কের রুট : প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী প্রস্তাবিত আউটার রিং রোডের অ্যালাইনমেন্টের কিছুটা সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত রুটটি হচ্ছে, হেমায়েতপুর (ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক)-কালাকান্দি (ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক) হয়ে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কে যুক্ত হবে। আবার তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক হয়ে মদনপুর-ভুলতা হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিলিত হবে এই চক্রাকার সড়ক। ঢাকা বাইপাস হয়ে কড্ডা (গাজীপুর)-বাইপাইল (ঢাকা ইপিজেড)-হেমায়েতপুর (ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক), যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণ করতে হবে এবং অবশিষ্ট ৮৪ কিলোমিটার বিদ্যমান সড়ক উন্নয়ন করা হবে। এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি খুব স্বচ্ছন্দে ঢাকাকে পাশ কাটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা কিংবা উপজেলা শহরে ঢুকতে পারবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। পূর্ব-পশ্চিম দিকের তুলনায় উত্তর-দক্ষিণে বর্তমানে যান চলাচল ও সড়কের সংখ্যা বিবেচনায় যানবাহনের অত্যধিক চাপের কারণে ঢাকা মহানগরী যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে ক্রমবর্ধমান যানবাহনের অত্যধিক চাপ সামলানোর জন্য ঢাকা সিটিতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মহানগরীর ভিতরে প্রবেশ না করেই দেশের পূর্ব থেকে পশ্চিমে এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে যাতায়াতকারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এ ছাড়া ঢাকার যাত্রীদের একটা বড় অংশ আউটার রিং রোড ব্যবহার করে খুব সহজে ও কম সময়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। ফলে ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরের যানজট ব্যাপকভাবে কমবে এবং বিদ্যমান ট্রাফিক লোড রিং রোডের দিকে মোড় নেবে। যাত্রীরা আউটার রিং রোড দিয়ে ইনার রিং রোড ব্যবহার করে ঢাকা মহানগরীর যে কোনো এলাকা থেকে অন্য এলাকায় নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে ভ্রমণ করতে পারবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর