বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

হঠাৎ তিন সিটি ভোট থেকে পিছিয়ে গেল ইসি

গোলাম রাব্বানী

হঠাৎ তিন সিটি ভোট থেকে পিছিয়ে গেল ইসি

হঠাৎ ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট অনুষ্ঠান থেকে পিছিয়ে গেল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে ডিসেম্বরে ভোট করার পরিকল্পনার কথা জানালেও এখন ভোট নিয়ে কোনো কথা বলছে না সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। এমনকি এক মাস পরে ভোট অনুষ্ঠানের সময়সীমা শুরু হতে চললেও কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেনি। এ বিষয়ে একাধিক নির্বাচন কমিশনার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, ডিসেম্বরে ভোট অনুষ্ঠানের কথা এর আগে শুনেছিলাম, পত্র-পত্রিকায় নিউজও দেখেছি। কিন্তু কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। ডিসেম্বরে ঢাকার দুই সিটিতে ভোট অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইসির সাবেক ও বর্তমান সচিব একাধিকবার গণমাধ্যকে জানিয়েছেন। কিন্তু ইসি সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, তিন সিটি ভোট নিয়ে বর্তমানে কোনো আলোচনা নেই। তবে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটির সম্প্রসারিত নতুন ৩৬ ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মেয়াদ কী হবে তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য ইসির আইন শাখার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে মেয়াদের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এর পরে ভোটের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।  

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন- ঢাকার দুই সিটিতে ডিসেম্বরে ভোট হলে নতুন ভোটারদের নিয়ে আইনি জটিলতা হতে পারে। তবে মার্চে ভোট হলে তেমন কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ ডিসেম্বরের শেষে দিকে নির্ধারিত হওয়ায় ঢাকার ভোট ডিসেম্বরের পরে দেওয়ার যুক্তি দেখাচ্ছেন অনেকেই। এক্ষেত্রে বড় দুই দলের সম্মেলনের সময় ঢাকায় ভোট দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়েও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ডিসেম্বরে শুধু ঢাকার দুই সিটিতে ভোট এবং মার্চে চট্টগ্রামে ভোট দিলে ইসির জন্য কিছু সুবিধা রয়েছে। কেননা তিন সিটিতে দুই দফায় ভোট হলে ইসি সুষ্ঠু ভোটের ক্ষেত্রে নজর দিতে পারবে। কাজের চাপ কম হবে। আইনশৃঙ্খলাও নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বর না মার্চে ভোট হবে তা সরকারের ওপর নির্ভর করছে। সরকারের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে দুই ধরনের প্রস্তুতি রেখেছিল কমিশন। প্রথমত-ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুধু ঢাকার দুই সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান করা। দ্বিতীয়ত- আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে একই দিনে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান করার। কিন্তু হঠাৎ করেই নির্বাচনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে কমিশন।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একই দিনে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটির ভোট হয়েছিল। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় ভোট করতে হবে। সেই হিসাবে ঢাকা উত্তরের মেয়াদ হবে আগামী বছরের (২০২০ সালের) ১৩ মে পর্যন্ত; আর দক্ষিণে ১৬ মে পর্যন্ত। চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদ শেষ হবে (২০২০ সালের) ৫ আগস্ট পর্যন্ত। আর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ নির্বাচনের উপযোগী হচ্ছে চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝিতে এবং চট্টগ্রাম নির্বাচনের উপযোগী হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে।

সর্বশেষ খবর