শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দাম কমতে শুরু করেছে পিয়াজের

নতুন সবজির সরবরাহ বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাম কমতে শুরু করেছে পিয়াজের

চড়া মূল্যে পিয়াজ কিনতে হচ্ছে। ১০০ টাকারও বেশি কেজি বিক্রি হয়েছে রাজধানীর বাজারগুলোয়। তবে বিভিন্ন বাজারে সরকারি অভিযানে পিয়াজের দর কমা শুরু হয়েছে। এদিকে শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মুলার সরবরাহ বাড়লেও হঠাৎই রাজধানীর বাজারগুলোয় দাম বেড়েছে সব ধরনের সবজির। গতকাল রাজধানীর শ্যামবাজার, তাঁতীবাজার, ঠাটারী বাজার, সেগুনবাগিচা, নিউমার্কেট, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়াসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বেশির ভাগ বাজারেই পিয়াজের কেজি ৭০ থেকে ৮০; যা আগের সপ্তাহে ১০০ টাকার ওপরে ছিল। ভারত রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পিয়াজের দর বেড়ে যায়। ভারতের এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যেসব পিয়াজ আমদানির উদ্দেশ্যে সীমান্তে এসে আটকে পড়েছিল সেগুলো এখন বাংলাদেশের বাজারে ঢুকছে ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দর আরও কমে আসবে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো, ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গাজরের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। শীতের আগাম সবজি শিমের দামও বেশ চড়া; প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ছোট আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাতাকপি। মুলা ৫০-৬০ টাকা কেজি। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ, করলা, ঝিঙ্গা, বরবটি, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়স, উচ্ছে, ধুন্দুলসহ সব ধরনের সবজি। গত সপ্তাহে ছোট আকারের যে লাউ ৫০-৬০ টাকা পিস বিক্রি হয়েছে তা এখন ৭০-৮০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা। বরবটি, বেগুন ৭০-৮০ টাকা। চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি; যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১০০০-১১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে। রুই ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৬০, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাঁচকি ২৫০ থেকে ৩৫০, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০, টেংরা ৫৫০-৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরু মাংস ৫৫০ থেকে ৫৭০, খাসি ৭৫০ থেকে ৭৮০, ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৫০, লাল লেয়ার ২২০ থেকে ২৫০, লাল কক ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজ আমদানি শুরু : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, কিছুদিন বন্ধ থাকার পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পিয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বন্ধের দিনেও বন্দর দিয়ে পিয়াজের ট্রাক ঢুকেছে।

জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভারত থেকে পিয়াজবাহী ট্রাক বাংলাদেশে পৌঁছে। এদিন ৫৮ ট্রাক পিয়াজ বাংলাদেশে আসার কথা বলে জানান হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন। এদিকে ৪দিন পরে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হওয়ায় দেশের বাজারে পিয়াজের দাম কমবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন সাংবাদিকদের জানান, ‘অভ্যন্তরীণ বাজারে পিয়াজের সংকট ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গত রবিবার বিকাল থেকে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় ভারতের অভ্যন্তরে পিয়াজের আমদানি করা ট্রাক আটকা পড়ে। পুরানো এলসিগুলোর বিপরীতে পিয়াজ রপ্তানি করতে আমরা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে আসছিলাম। সেই আলোকে মঙ্গলবার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়। কিন্তু তা ফলপ্রসূ না হওয়ায় সেদিন কোনো পিয়াজ রপ্তানি করেনি দেশটির ব্যবসায়ীরা। পরে বুধবারের বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হওয়া ৮৫২ ডলার মূল্যের পুরানো এলসিগুলোর বিপরীতে ভারত সরকার পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয়। কিন্তু কাস্টমসে সেই অনুমতির কপি না আসায় পিয়াজ রপ্তানি হয়নি। পরে সন্ধ্যার দিকে সেই আদেশের কপি কাস্টমসে আসে কিন্তু সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় কোনো পিয়াজ দেশে প্রবেশ করেনি। আটকে থাকা পিয়াজগুলো রপ্তানির জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অনুরোধে গতকাল ছুটির দিনে বন্দর খোলা রাখা হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভারত পিয়াজ রপ্তানি শুরু করে।

সর্বশেষ খবর