শিরোনাম
শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ভোলায় আখ চাষের অপার সম্ভাবনা

ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় আখ চাষের অপার সম্ভাবনা

মাটি এবং আবহাওয়ার কারণে দ্বীপজেলা ভোলায় চলতি মৌসুমেও আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের মতে, ভোলার চরাঞ্চলের বেলে দোঁয়াশ মাটিতে আখ চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনা আখ চাষিদের অনুকূলে না থাকায় চাষিরা দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে ভোলার আখ চাষে হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। স্থানীয় প্রবীণ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় ভোলার প্রতিটি কৃষক পরিবারেরই নিজস্ব আখ খেত ছিল। প্রত্যেক অবস্থাপন্ন চাষি কম-বেশি আখ চাষ করতেন। বাড়ি বাড়ি ছিল আখ মাড়াইয়ের ছোট ছোট কল। নিজেরাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে গুড় উৎপাদন করতেন। আধুনিক চিনির দাপটে গুড়ের কদর কমে যাওয়ায় চাষিরা এখন কেবল খাওয়ার জন্যই আখ চাষ করছেন। তাছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে চিনিকল না থাকায় উৎপাদিত আখ নিয়েও বিপাকে পড়তে হয়। কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে রোগবালাই কিংবা পোকার আক্রমণ না থাকায় আখের ব্যাপক ফলন হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এ বছর আখের ফলন অনেক বেশি হওয়ায় খেতের ফলন দেখে আনন্দে মুখে হাসি ফুটে উঠেছে আখ চাষিদের। আশাতীত ফলন হওয়ায় চাষিরা আখ বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আখ চাষি আবদুল জলিল জানান, এক লাখ টাকা খরচ করে তিনি ২ একর জমিতে আখের চাষ করেছেন। খেতে কোনো পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই। ব্যাপক ফলন হয়েছে। অনেক টাকা লাভ হবে এ বছর। চর খলিফা ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামের আখ চাষি নিজাম সিকদার জানান, ৫০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি ১ একর জমিতে আখ চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছেন। আরও প্রায় ১ লাখ টাকার আখ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। চাষিদের অভিযোগ, মধ্যস্বত্বভোগী এবং সিন্ডিকেটের কারণে পাইকারি বাজারে তারা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। এলাকায় আড়ত আছে মাত্র একটি। ফলে আড়ত থেকে যে দাম নির্ধারণ করা হয় সেই দামেই আখ বিক্রি করতে বাধ্য হন চাষিরা। যে আখ প্রতি পিস চাষিরা বিক্রি করছেন ১৫-২০ টাকায় সেই আখ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। সঠিক তদারকি ও বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় তারা বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্যমূল্য থেকে। বিশিষ্ট কৃষিবিদ ও কৃষি গবেষক এ বি এম নূরুল হক জানান, ভোলার মাটি আবহাওয়া সবকিছুই আখ চাষের জন্য উপযোগী। কিন্তু এখানে আখের গুড় কিংবা চিনি তৈরির কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কেবল রস খাওয়া ছাড়া এই আখের আর কোনো চাহিদা নেই। সরকারের উচিত ভোলায় চিনিকল কিংবা আখের গুড় উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা হলে ভোলায় আখ চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

সর্বশেষ খবর