মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিদ্রোহীরা ক্ষমা চাইলেও কঠোর আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

বিদ্রোহীরা ক্ষমা চাইলেও কঠোর আওয়ামী লীগ

উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করায় দলীয় পদধারী ১৭৭ জন প্রার্থীকে ‘কারণ দর্শাও’ চিঠি পাঠায় আওয়ামী লীগ। জবাবে তাদের প্রায় সবাই আত্মপক্ষ সমর্থন করে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় আগের চেয়ে বেশি কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ। তাই ক্ষমা না-ও পেতে পারেন দলটির বিদ্রোহীরা। দলের কাছে তাদের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সাংগঠনিক শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন তারা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

দলীয় সূত্রমতে, কারণ দর্শানোর জবাব পাওয়ার পর এখন তা যাচাই-বাছাই করছেন আওয়ামী লীগের বিভাগীয় যুগ্ম সাধারণ ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা। শিগগিরই দলের সম্পাদকম-লীর বৈঠকে এগুলোর বিষয়ে আলোচনা হবে। পরে তা দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তোলা হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে বিদ্রোহীদের বিষয়ে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যারা একবার বেইমান, তারা সারাজীবনই বেইমান। ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দলের কার্যনির্বাহী সংসদে তাদের শাস্তির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৭৭ জনের মধ্যে ১৫৫ জন এরই মধ্যে জবাব দিয়েছেন। জবাবে তারা প্রথমে সাধারণ ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতাদের বিতর্কিত ভূমিকাকেও দায়ী করেন। অন্যদিকে বেশ কয়েকজন দলীয় প্রার্থী, যারা বিদ্রোহীদের কারণে পরাজিত হয়েছেন, তারাও চিঠি দিচ্ছেন কেন্দ্রে। এতে বেশ কয়েকজন এমপি-মন্ত্রীর নাম রয়েছে। সেসব প্রভাবশালীর নামের তালিকা করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে থাকা প্রায় ২০০ নেতা নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেন। ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ‘বিদ্রোহী’ ও তাদের মদদদাতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর পাঠানো কারণ দর্শাও নোটিসে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এ পর্যন্ত ১৫৫ জন নোটিসের জবাব দিয়েছেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ জানিয়েছেন, কারণ দর্শাওয়ের জবাব যারা দিয়েছেন, তাদের বিষয়ে আগামী কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে। আর যারা জবাব দিচ্ছেন না তাদের শাস্তি কারণ দর্শাও নোটিসের জবাবের সময়সীমা শেষে অটোমেটিক কার্যকর হবে।  আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কারণ দর্শাওয়ের জবাবে প্রায় সবাই সাধারণ ক্ষমা চেয়েছেন। তাদের কেউ কেউ জীবনে আর কখনো এমন ভুল করবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্ব স্ব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক তাদের জবাব পর্যালোচনা করছেন। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

সর্বশেষ খবর