বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ব্ল্যাক রাইসের চাষ বাড়ছে

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

ব্ল্যাক রাইসের চাষ বাড়ছে

কুমিল্লায় ব্ল্যাক রাইসের (কালো রঙের চালের ধান) চাষ বাড়ছে। গত বছর পাঁচ শতক জমিতে চাষ করা হলেও ১৫ জন কৃষক এবার ১৫০০ শতক জমিতে ব্ল্যাক রাইসের চাষ করেছেন। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার মনাগ্রাম মাঠে এ ধানের চাষ করা হচ্ছে। এ চালের ভাত ডায়াবেটিস রোগীরা খেলে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মনাগ্রামের কৃষক মনজুর হোসেন প্রথম পাঁচ শতক জমিতে কালো ধান চাষ করেন। এবার তিনিসহ ১৫ জন কৃষক ব্ল্যাক রাইসের চাষ করেছেন। ঢাকায় বিদেশি কোম্পানিগুলো এ চাল হাজার টাকায় কেজি বিক্রি করলেও স্থানীয় কৃষকরা তা ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। সরেজমিন দেখা যায়, মনাগ্রামের মাঠে বেগুনি ও সবুজ ধানের চারা বাতাসে দোল খাচ্ছে। মাঠে ভারতের আসাম, ইন্দোনেশিয়া, চায়না, জাপান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সাত প্রকার কালো চালের ধান লাগানো হয়েছে। চাল কালো হলেও সব ধানের পাতার রং বেগুনি নয়। কিছু আবার সবুজ রঙের। কৃষক মনজুর হোসেন বলেন, কৃষি গবেষক ড. আখতার হামিদ খান ধান উৎপাদনে কুমিল্লার চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। তার কাজ দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। কালো চাল ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক। এতে ভিটামিন, ফাইবার ও মিনারেল রয়েছে। তাই কালো চাল উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছেন। অনেকে বিদেশ থেকে উচ্চ দামে চাল কিনে খায়। তিনি বিভিন্ন দেশের সাত প্রকার কালো চালের ধান সংগ্রহ করে চাষ করছেন। কালো চাল উৎপাদন বাড়লে কৃষিতে নতুন গতি আসবে। এ বিষয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. মেহেদী মাসুদ বলেন, কালো চালের ভাত সাধারণ ভাতের অর্ধেক খেলে পেট ভরে যাবে। ফাইবার বেশি থাকায় তা সময় নিয়ে হজম হবে। যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। যাদের পেটে চর্বি রয়েছে তাদেরও উপকার হবে। কৃষক মনজুর হোসেনের কালো জাতের ধানের চাষ সারা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম। কালো চালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) অনেক কম। জিআই যত কম হয় সেই খাবার শরীরের জন্য তত উপকারী। গ্লুকোজের জিআই ১০০ ভাগ, চিনির ৮০ ভাগ, সাদা চালের ভাতের ৭২ ভাগ, আটার রুটিতে ৬৫ ভাগ আর কালো চালের জিআই মাত্র ৪২ ভাগ। কালো চালের বিষয়টি দেশে গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে। কালো চাল ভালো উৎপাদন হলে রোগ প্রতিরোধের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর