শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

উইলস লিটল শিক্ষার্থী রিশা হত্যায় ওবায়দুলের মৃত্যুদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক

উইলস লিটল শিক্ষার্থী রিশা হত্যায় ওবায়দুলের মৃত্যুদণ্ড

ওবায়দুল হক

রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলায় টেইলার্সের ওবায়দুল হককে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণা উপলক্ষে একমাত্র আসামি ওবায়দুলকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর নিহত রিশার মা তানিয়া বেগম ও বাবা রমজান হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারের জন্য তিনটি বছর আদালতে ঘুরেছি। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। হাই কোর্টে যেন এ আদেশ বহাল থাকে। আসামির ফাঁসি যেন দ্রুত কার্যকর হয়। সন্তান হারানো যে কী কষ্টের, যার

যায় সে-ই বোঝে। এভাবে আর যেন কোনো মায়ের কোল খালি না হয়।’ এ ছাড়া রায় ঘোষণা উপলক্ষে রিশার ছোট ভাই ও বোন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন ও তার সহপাঠীরা আদালতে উপস্থিত হন। বেলা ২টা ৫১ মিনিটে ওবায়দুলকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ৩টায় বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। ৩টা ২৬ মিনিটে আদালত ওবায়দুলের মৃত্যুদ- ঘোষণা করে। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। রায়ে বাবা-মা ছাড়াও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রিশার সহপাঠী ও বাদীপক্ষের আইনজীবীরা। রায় শুনে উপস্থিত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা আদালতের প্রাঙ্গণে আনন্দ প্রকাশ করে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করেন ওবায়দুল। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ আগস্ট রিশার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ২৪ আগস্ট রিশার মা তানিয়া বেগম বাদী হয়ে রমনা থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। পরে রিশা মারা গেলে এটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়। পুলিশ ওই বছরের ৩১ আগস্ট নীলফামারী থেকে গ্রেফতার করে আসামি ওবায়দুলকে। পরে রিশাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন ওবায়দুল। এরপর ঘটনা তদন্ত করে ওই বছরের ১৪ নভেম্বর পুলিশ ওবায়দুলকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে। অভিযোগপত্রে রিশার চার সহপাঠীসহ ২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, রিশার মা তানিয়া ওই হত্যাকান্ডের পাঁচ-ছয় মাস আগে রিশাকে নিয়ে বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করাতে যান। এরপর দোকানের রসিদের কপি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুল ফোনে রিশাকে বিরক্ত করতে থাকেন। রিশা প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওবায়দুল তাকে ছুরি মেরে হত্যা করেন। আসামি ওবায়দুল দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মীরাটঙ্গী গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে। তিনি ঢাকার ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলে বৈশাখী টেইলার্স নামের একটি টেইলার্সের কর্মচারী ছিলেন।

সর্বশেষ খবর