শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দাম কমছে না পিয়াজের সবজির বাজারও চড়া

বাজার দর

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাম কমছে না পিয়াজের সবজির বাজারও চড়া

রাজধানীর নিত্য পণ্যের বাজারে দাম কমছে না পিয়াজের। প্রতি কেজি এখনো ৯০-৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় দেশি পিয়াজের দাম ১০০ টাকা। এদিকে শীতকালীন সবজি বাজারে এলেও দাম চড়া।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, নিউমার্কেট, চানখাঁরপুল, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে আমদানি করা পিয়াজের দাম বেড়েছে ৫২ ভাগ। আর এক মাসে  দেশি পিয়াজের দাম বেড়েছে ৬০ ভাগ। ভারতীয় পিয়াজসহ আমদানি করা পিয়াজ ৮০ টাকা আর দেশি পিয়াজ প্রতি কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত বছরের ১১ অক্টোবর খুচরা বাজারে আমদানি করা  পিয়াজের দাম ছিল ২৫ টাকা। এখন সেই পিয়াজের দাম ৮০ টাকা।

হাতিরপুল বাজারের দোকানি খলিল মিয়া বলেন, খুচরা বাজারে এখন পিয়াজের সরবরাহ বেশি। এ কারণে পিয়াজের দাম আগের চেয়ে একটু কমেছে। এখন ৮০ টাকা দরে আমদানি (ভালো মানের) পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি পিয়াজের কেজি এখনো ১০০ টাকাই আছে। দেশি পিয়াজের দাম কমে না আসায় হতাশা ব্যক্ত করেন গৃহিণী আলেয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘দেশি পিয়াজ এখনো ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’ এটা সীমিত আয়ের মানুষের ওপর জুলুম।

সেগুনবাগিচা এলাকায় দেশি হাইব্রিড পিয়াজ কেজিপ্রতি ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মগবাজার কাঁচাবাজারে দেশি পিয়াজের প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা দরে। মানিকনগর এলাকায় ভ্যানে করে দেশি হাইব্রিড পিয়াজ কেজিপ্রতি ৯৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিকে পাইকারি বাজারে পিয়াজের দাম আবারও সামান্য বেড়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও  পুরান ঢাকার পাইকারি ব্যবসা কেন্দ্র শ্যামবাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পিয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। কয়েকদিন আগে পাইকারি বাজারে এই পিয়াজ ৫৫ টাকায় নেমেছিল।

এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। বিক্রেতারা বলছেন, এখন সবজির দাম কম হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম হওয়ায় খুচরাতেও বাড়তি রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। এসব বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ৭০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। একইভাবে আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে অন্য সব সবজি। প্রতিকেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, করলা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৪০ টাকা, শসা (দেশি) ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, শিম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমলেও ২০ টাকা বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি শিম বিক্রি করতে দেখা গেছে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া আকারভেদে প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। সবজির মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক। প্রতি আঁটি (মোড়া) লালশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলাশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, কুমড়া শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে মাছের সঙ্গে বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে গরু-খাসির মাংস, চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলের বাজার। অপরদিকে কিছুটা বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এসব বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, লেয়ার (সাদা) ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, লেয়ার (লাল) ২৮০ টাকা কেজি দরে। প্রতিকেজি গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ছাগির মাংস ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা কেজি দরে। এদিকে লাল ডিমের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দাম। এসব বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে ১১৫ টাকায়। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যসব ডিম।

সর্বশেষ খবর