শিরোনাম
রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পচনশীল রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু

পচনশীল রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

দেশে কি সুস্থ ধারার রাজনীতি আছে- এমন প্রশ্ন রেখে ঢাকসুর সাবেক জিএস ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ছাত্র রাজনীতির নামে সব শিক্ষাঙ্গনে বছরের পর বছর চলছে সন্ত্রাস আর চর দখলের মতো হল দখল। চলছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, খুনখারাবি। এগুলোকে কোনোভাবেই ছাত্র রাজনীতি বলতে পারি না। শিক্ষাঙ্গনে একটা অসুস্থ ধারার রাজনীতি চলছে। লেজুড়ভিত্তির নামে তথাকথিত রাজনীতি চলছে। পচনশীল তথাকথিত এই ছাত্র রাজনীতি থেকে রেবিয়ে আসতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। বুয়েটে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠছে। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ সমাধান, না বিকল্প কী- এমন নানান প্রশ্নের জবাবে সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ছাত্র রাজনীতি দেখেছি ’৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বলেছিল ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।’ ’৫২ সালে সালাম রফিক বরকতরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষায় পরিণত করেছিল। ’৬৫ সালে স্বৈরাচার আইয়ুব খানের হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের শিক্ষার্থীরা গর্জে উঠেছিল। ফলে এই কমিশন প্রত্যাখ্যাত হয়। ’৬৯ সালে গণঅভুত্থানের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের ছাত্ররা আইয়ুব খানকে উৎখাত করেছিল এবং ঢাকসুর নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুবিজুর রহমানকে মুক্ত করে ছাত্রসমাজ ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাই কলাভবনের গাড়ি বারান্দায় ২ মার্চ স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে। এগুলো হচ্ছে ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আমরা সেই গৌরবোজ্জ্বল ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে ফিরে যেতে চাই। এই পচনশীল তথাকথিত ছাত্র রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ জন্য দরকার দল-মত নির্বিশেষে সবার ঐক্য।

 কোনো রাজনৈতিক দলই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুনখারাবি প্রশ্রয় দেয় না। সব রাজনীতিবিদকে অতীতের গৌরবোজ্জ্বল রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে। তা না হলে বিক্ষিপ্ত কিছু সিদ্ধান্তে এই কঠিন সমস্যার সমাধান হবে না। আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারব না। আবরার ফাহাদের মৃত্যু আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই পঙ্কিল রাজনীতির বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে আর কোনো মায়ের বুক খালি হোক আমরা তা চাই না। আর কোনো আবরারকে হারাতে চাই না। শিক্ষার্থীদের অতীতের মতো জাতির বিবেক হিসেবে দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর