শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভাঙল লালন মেলা

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

ভাঙল লালন মেলা

আত্মশুদ্ধি এবং ধর্ম-বর্ণ-জাত-পাত ভুলে মানুষকে মানুষরূপে টিকে থাকার প্রত্যয়ে গতকাল শেষ হয়েছে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আখড়া বাড়িতে আয়োজিত তিন দিনের লালন স্মরণোৎসব।

সমাপনী এই দিনে লালন ভক্তদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে সত্য ও সুন্দরের আহ্বান। সেইসঙ্গে ধ্বনিত হয়েছে বিদায়ের সুরও। ভক্তরা আপন মনে গেয়েছেন, ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি’ ‘পারে লয়ে যাও আমায়’। গতকাল মধ্যরাতে সমাপনী আলোচনা সভা ও অসংখ্য ভাবসংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় স্মরণোৎসব। প্রসঙ্গত, বাংলা ১২৯৭ সালের পয়লা কার্তিক সাধক পুরুষ লালন সাঁই দেহত্যাগ করেন। এরপর থেকে লালনের অনুসারীরা প্রতি বছর ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এদিনটি পালন করে আসছেন। তবে লালন একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর এ আয়োজনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার বাউল উৎসব শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই জড়ো হয়েছিলেন ছেঁউড়িয়ার লালন ধামে। নির্লোভ, নিরহংকার সহজ-সরল এই মানুষ আধুনিক সামাজিক লোকাচারের বাইরে থেকে আত্মশুদ্ধির সাধনা করেন এখানে। ভাবগান আর বাউল আচারের যজ্ঞ পালন ছাড়াও বাউল পথ ও মতের দীক্ষাও নেন অনেকে।  বিদায় বেলায় নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা প্রবীণ বাউল আলম শাহ বলেন, ‘সাঁইজির চরণ তলে কটা দিন পড়েছিলাম। এখন বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে, কিন্তু মনতো চাইছে না বাড়ি ফিরতে। আরও কটা দিন থেকে যেতে পারলে ভালো হতো, মনটা কেমন করছে, আর যদি আসতে না পারি কোনো দিন।’ আরেক বাউল ইসলাম শাহ বলেন, ‘বাবা বাড়ি ফিরতে মন চাইছে না, ভাবছি আরও কটা দিন গুরু ধামে থেকে যাব।’ মহিলা বাউল করিমন খাতুন বলেন, ‘বাবা বাড়ি ফিরে যাচ্ছি ঠিকই, মনটা পড়ে রইল আখড়া বাড়িতে। এখন থেকেই ফাল্গুনের দোল উৎসবের প্রহর গুনতে থাকব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর