সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনের খবর নেই নির্বাচন কমিশনে। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হতে চললেও কমিশন এ নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা করেনি। এর আগে ডিসেম্বরে ঢাকার দুই সিটিতে ভোট করার কথা জানালেও এখন সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমনকি ভোট নিয়ে কোনো কথাও বলছে না সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। আগামী ডিসেম্বরে ঢাকার দুই সিটি ভোট করার প্রস্তুতি রয়েছে, এমন কথা একাধিকবার গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ইসির সাবেক ও বর্তমান সচিব। ইসি সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, সিটি ভোট নিয়ে বর্তমানে কোনো আলোচনা নেই। তবে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটির সম্প্রসারিত নতুন ৩৬ ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মেয়াদ কী হবে? তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঢাকার দুই সিটিতে ভোট করতে হলে ১৭ নভেম্বরের পর তফসিল ঘোষণা করতে হবে কমিশনকে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার জন্য এখনো প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নভেম্বরের মাঝামাঝিতে ভোট অনুষ্ঠানের সময়সীমা শুরু হচ্ছে। কিন্তু কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেনি। এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, ডিসেম্বরে ভোট অনুষ্ঠানের কথা এর আগে শুনেছিলাম, পত্র-পত্রিকায় নিউজও দেখেছি। কিন্তু কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। ইসির নির্বাচন শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার দুই সিটিতে ডিসেম্বরে ভোট হলে নতুন ভোটারদের নিয়ে আইনি জটিলতা হতে পারে। তবে মার্চে ভোট হলে তেমন কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ ডিসেম্বরের শেষের দিকে নির্ধারিত হওয়ায় ঢাকার ভোট ডিসেম্বরের পর দেওয়ার যুক্তি দেখাচ্ছেন অনেকেই। এক্ষেত্রে বড় দুই দলের সম্মেলনের সময় ঢাকায় ভোট করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়েও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে শুধু ঢাকার দুই সিটিতে ভোট এবং মার্চে চট্টগ্রামে ভোট দিলে ইসির জন্য কিছু সুবিধা রয়েছে। তিন সিটিতে দুই দফায় ভোট হলে ইসি সুষ্ঠু ভোটের ক্ষেত্রে নজর দিতে পারবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণেও সুবিধা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বর না মার্চে ভোট হবে তা সরকারের ওপর নির্ভর করছে। সরকারের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে দুই ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছিল কমিশন। প্রথমত, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুধু ঢাকার দুই সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান করা। দ্বিতীয়ত, আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে একই দিনে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান করার। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একই দিনে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটির ভোট হয়েছিল। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় ভোট করতে হবে। সেই হিসাবে ঢাকা উত্তরের মেয়াদ হবে আগামী বছরের (২০২০ সালের) ১৩ মে পর্যন্ত; আর দক্ষিণের ১৬ মে পর্যন্ত। চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদ শেষ হবে (২০২০ সালের) ৫ আগস্ট। আর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ নির্বাচনের উপযোগী হচ্ছে চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝিতে এবং চট্টগ্রাম নির্বাচনের উপযোগী হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে।