সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ অগোছালো

পিরোজপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চলছে অনেকটাই অগোছালো অবস্থায়। জেলা সম্মেলনের পরে প্রায় ৪ বছরে বর্ধিত সভা হয়েছে মাত্র একটি। অধিকাংশ উপজেলা কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব কমিটির কোনোটিতে সভাপতি ইতিমধ্যে মারা গেছে, কোনোটিতে বার্ধক্যজনিত কারণে অচল। দলে রয়েছে কোন্দল। সহযোগী সংগঠনগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে পিরোজপুরে শুধাংশু শেখর হাওলাদারকে সভাপতি ও এ কে এম এ আউয়ালকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করে দেয় কেন্দ্র। ২০০৪ সালে সভাপতি শুধাংশু শেখর হাওলাদারের মৃত্যুর পরে দলের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে যায় সাধারণ সম্পাদক এ কে এম এ আউয়ালের হাতে। পুরো জেলায় বিভিন্ন কমিটিতে তার নিজস্ব লোককে শীর্ষপদে বসাতে থাকে। এরপর ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন এ কে এম এ আউয়াল। এরপরই শুরু হয় জেলাজুড়ে তার একক আধিপত্য। জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনে তৈরি হয় নিজস্ব বলয়। এভাবেই চলতে থাকে সবকিছু। এরপর ২০১৫ সালে জেলা সমে¥লন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে এ কে এম এ আউয়াল সভাপতি ও অ্যাডভোকেট হাকিম হাওলাদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। গঠন করা হয় ৭১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি। পরে আরও ৪ জনকে কোওয়াপট করে মোট ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়। ইতিমধ্যে দলের মধ্যে একক নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করে এ কে এম এ আউয়াল। পিরোজপুরের পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেকের সঙ্গে কোন্দল শুরু হয় এ কে এম এ আউয়ালের। জেলা কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান মালেক ও সাধারণ সম্পাদক হাকিম হাওলাদারের নেতৃত্বে জেলার রাজনীতিতে তৈরি হয় আউয়ালবিরোধী বলয়।  জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী সম্পৃক্ত হয় এ বলয়ে। তখন থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালকে দলীয় কর্মসূচিতে কম দেখা যায়। সংসদ নির্বাচনে সদর আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে সক্রিয় থাকেন হাবিবুর রহমান মালেক। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন এ কে এম এ আউয়াল। মনোনয়ন পাননি হাবিবুর রহমান মালেকও।  পিরোজপুর সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিমকে। তখন নৌকার প্রার্থী শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে কাজ করেন হাবিবুর রহমান মালেক ও হাকিম হাওলাদারের পক্ষ। এমপি নির্বাচিত হন শ ম রেজাউল করিম। দায়িত্ব দেওয়া হয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। এর পরই পাল্টে যেতে থাকে জেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতির চিত্র। সব পক্ষের দলীয় নেতা-কর্মীরা  ভিড়তে শুরু করে মন্ত্রীর কাছে। আর মন্ত্রীও নেতা-কর্মীদের কাছে টেনে নেয়। নেতা-কর্মীদের প্রতি মন্ত্রীর আন্তরিকতার কারণে ধীরে ধীরে দলের মধ্যে কমতে থাকে অন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব। পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী জানান, নেসারাবাদ উপজেলা কমিটি করা প্রায় ১৫ বছর আগে। কাউখালী, নাজিরপুর, ভান্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া কমিটির মেয়াদও শেষ। তবে এসব জায়গায় সম্মেলন করার প্রস্তুতি রয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলেই সম্মেলন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর