মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

টার্গেট কিলিং পরিকল্পনা ছিল চার জঙ্গির

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম ফের টার্গেট কিলিংয়ের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনসার আল ইসলামের চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য জানালেন র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, রবিবার রাতে গাবতলী ও সাভারের আমিনবাজার থেকে আনসার আল ইসলামের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মুফতি সাইফুল ইসলাম, মো. সালিম মিয়া, জুনায়েদ ও আহম্মেদ সোহায়েল। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদ সম্পর্কিত বই, ভিডিও, কবিতা, বয়ান, লিফলেট, মোবাইল, ল্যাপটপ ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, এই চার জঙ্গি এখন আনসার আল ইসলামের হয়ে কাজ করলেও আগে তারা হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলন। পরবর্তীতে হরকাতুল জিহাদ ভেঙে গেলে আনসার আল ইসলামে তারা যোগদান করেন। জঙ্গিরা টার্গেট  কিলিংয়ের পরিকল্পনা করেছিল, যা গ্রেফতারের পর নস্যাৎ হয়ে গেছে। ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠায় যারা বিরোধ সৃষ্টি করতে চায়, শাস্তি হিসেবে তাদেরই টার্গেট কিলিংয়ের উদ্দেশ্য ছিল। এজন্য তারা নিজেদের কাছে চাপাতি রাখত। গ্রেফতার চারজনের সঙ্গে আমরা আরও ২০-২৫ জন জঙ্গি সদস্যের লিংক পেয়েছি। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। র‌্যাব-৪ এর প্রধান আরও বলেন, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, অ্যান্ড্রয়েড ফোনসহ বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।

 সেখানে জঙ্গিবাদের প্রশিক্ষণের নানা ক্লিপস পাওয়া গেছে। সেগুলো দেখে তারা উদ্বুদ্ধ হয় এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করে। গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী অবস্থায় জঙ্গি সংগঠনে জড়িত হয়। জঙ্গি তৎপরতা, প্রশিক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে তারা নিজেদের মধ্যে অনলাইনে প্রোটেক্টিভ অ্যাপস, প্রোটেক্টিভ টেক্সট ও প্রোটেক্টিভ ব্রাওজারের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করত।

জঙ্গিবাদে যেভাবে চারজন : মুফতি সাইফুল ইসলাম আনসার আল ইসলামের শীর্ষ জঙ্গিদের একজন। রাজধানীর উত্তরবাড্ডা এলাকায় নৈশ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ছাত্রজীবনে হরকাতুল জিহাদ করলেও তাদের সঙ্গে সক্রিয়তা কমিয়ে দেন।

সব সময় সশস্ত্র জঙ্গিবাদে অংশগ্রহণে আগ্রহ থাকায় পুনরায় আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। সাইফুলের হাত ধরেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন সালিম মিয়া। রাজধানীতে একটি লিফট কোম্পানিতে সংগ্রাহকের কাজ করেন। ২০১৩ সালে নৈশ মাদ্রাসায় পড়তে গিয়ে সাইফুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানে উগ্রবাদের কথা শুনে আনসার আল-ইসলামে সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন।

ছাত্রজীবনে হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জুনায়েদ হোসেন। সাভারের হেমায়েতপুরে একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং শিক্ষক। সাইফুলের মাধ্যমে আনসার আল-ইসলামের জঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তার মাদ্রাসায় প্রতিনিয়ত সংগঠনের মিটিং হতো। মাহাদি নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে অ্যাপসের মাধ্যমে পরিচয় হয় আহম্মেদ সোহায়েলের। তার মাধ্যমেই আনসার আল ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারেন। পরে তাদের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই দলে যোগ দেন। দীর্ঘ তিন বছর ধরে তিনি এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।

সর্বশেষ খবর