বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রহস্যময় মামলা তালগোলে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০ অক্টোবর দুপুরে থানায় এজাহার দায়েরের পর মতিহার থানা পুলিশ ওই শিক্ষককে কাজলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। শিক্ষকের নাম দুরুল হুদা। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা মতিহার থানায় দুরুল হুদার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

তবে ঘটনার তারিখ, চার দিন দেরিতে মামলা করা এবং শিক্ষকের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড মামলাটিকে রহস্যময় করে তুলেছে। এ নিয়ে তালগোলে পড়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আর শিক্ষকের সহকর্মীরাও বলছেন, এমন ঘটনার সঙ্গে ওই শিক্ষকের জড়িত থাকাকে তারা মেনে নিতে পারছেন না। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক ইমরান জানান, একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে ১৬ অক্টোবর বাড়ি ফেরেন শিক্ষক দুরুল হুদা। ওইদিনই ওই ছাত্রীর বাবা তাকে ফোন করে মেয়েকে পড়াতে আসতে বলেন। কিন্তু ক্লান্ত থাকায় শিক্ষক সেদিন যেতে রাজি হননি। পরে আবারও ছাত্রীর মা ফোন করে তাকে পড়াতে আসতে বলেন। অনেকটা বাধ্য হয়ে সেদিন পড়াতে যান দুরুল হুদা। পড়ানো শেষ হওয়ার পর বাড়ি ফিরে এলে আবারও ফোন করে দুরুল হুদাকে ডাকা হয়। শিক্ষকের স্ত্রী শাহিন আকতার জানান, বিনা পারিশ্রমিকে ওই ছাত্রীকে পড়াতেন দুরুল হুদা। ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার স্বামীকে পড়াতে যেতে হতো। কারণ ওই ছাত্রীর বাবা দুরুলের স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। মামলায় যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, সেদিন অনেকটা জোর করেই মোবাইল ফোনে দুরুল হুদাকে ডেকে নেওয়া হয়। পড়ানো শেষ হলে দুরুল বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবারও তাকে ডেকে নেওয়া হয়। যেদিন দুরুলকে গ্রেফতার করা হয়, সেদিন দেড়টা পর্যন্ত তিনি স্কুলে দায়িত্বপালন করেছেন। এ ছাড়া ১৭ অক্টোবর দুরুল স্কুলে গিয়ে পরীক্ষার চিঠি নিয়েছেন। এরপর ২০ অক্টোবর পুলিশ তাদের বাড়িতে এলে তারা জানতে পারেন দুরুলের নামে মামলা হয়েছে। তার স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি শাহিন আকতারের। পুলিশ বলছে, ১৬ তারিখের ঘটনায় ২০ তারিখে মামলা হয়েছে। এই তিন দিন দুরুল হুদা তার প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন, পরীক্ষায় ডিউটি করেছেন। ফলে বিষয়টি অনেকটা তালগোলে বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, মামলার ঘটনাটি অনেকটা জটিল। তারা খুবই গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সমিতির সভাপতি জান্নাতুন নাহার রুনি জানান, যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মানতে পারছেন না অনেক সহকর্মী। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের শাস্তি চান তারা। তবে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়। তবে ওই ছাত্রীর মায়ের দাবি, ঘটনা সত্য। শিক্ষককে ফাঁসানোর কোনো কারণ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর