শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বরিশালের আড়ত ইলিশে সয়লাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের আড়ত ইলিশে সয়লাব

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর গত দুই দিনে পাঁচ হাজার মণেরও বেশি ইলিশ এসেছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ইলিশের পাইকারি মোকাম বরিশালের পোর্ট রোডের আড়তে। এর পরও ট্রলারবোঝাই ইলিশ আসছে মোকামে। ব্যাপক সরবরাহ থাকায় দামও ক্রেতার হাতের নাগালে। কিছুটা কম দামে ইলিশ কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। তবে প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনে গতকাল ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে প্রতি কেজি ইলিশের দাম। এদিকে ইলিশের ব্যাপক সরবরাহ থাকায় অবিশ্বাস্যভাবে কমেছে অন্যান্য মাছের দাম। আগামী কয়েক দিনে ইলিশের সরবরাহ আরও  বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। রসনাবিলাসীদের কাছে স্থানীয় নদ-নদীর মিঠাপানির রুপালি ইলিশের কদর সারা বছরজুরেই। কিন্তু বছরের নির্দিষ্ট সময় ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকায় সব সময় বাজারে পাওয়া যায় না এই মাছ। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে স্থানীয় নদ-নদীতে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই ইলিশ আসতে শুরু করে বরিশালের মোকামে। গতকাল সকাল পর্যন্ত দুই দিনে পাঁচ হাজার মণেরও বেশি ইলিশ এসেছে এই আড়তে। ইলিশের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত পোর্ট রোড। অন্যান্য সময়ের তুলনায় আকারভেদে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমে ইলিশ কিনতে পেরে দারুণ খুশি ক্রেতারা। বরিশালের ইলিশ আড়তদার জহির সিকদার জানান, সরবরাহ বেশি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ দামে বিক্রি হচ্ছে রুপালি ইলিশ। তবে গত বৃহস্পতিবারের চেয়ে গতকাল প্রতি কেজি ইলিশের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। গতকাল বরিশাল মোকামে ১ হাজার ২০০ গ্রাম থেকে বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৩৬ হাজার, কেজি আকারের প্রতি মণ ৩২ হাজার, রপ্তানিযোগ্য আকারের (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) ৩০ হাজার এবং ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আকারের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়।

 এদিকে বাজারে ইলিশে সয়লাব হওয়ায় অন্যান্য মাছের দাম কমেছে অবিশ্বাস্যভাবে। গতকাল বড় আকারের এক কেজি পোয়া মাছ বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। পোর্ট রোডের মাছ বিক্রেতা লালু সিকদার জানান, বরিশালের মানুষের প্রথম পছন্দ ইলিশ। বাজারে ইলিশ সস্তা হওয়ায় এখন অন্যান্য মাছের তেমন চাহিদা নেই। তাই দেশীয় মাছের দাম সর্বকালের সর্বনি¤œ বলে জানান তিনিসহ অন্যান্য মাছ বিক্রেতারা। বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা ফিরে এলে মোকামে ইলিশের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন চাহিদার ওপর ভিত্তি করে দাম ওঠা-নামা করতে পারে। তবে নিষেধাজ্ঞার পর বরিশালে সাম্প্রতিক বছরগুলোর চেয়ে বর্তমানে অনেক কম দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। বরিশাল জেলা মৎস্য দফতরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, আরও কয়েকদিন নদ-নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার পর গভীর সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলো উপকূলে ফিরে এলে ইলিশের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দামও ক্রেতার নাগালে থাকবে বলে আশা এই মৎস্য কর্মকর্তার।

সর্বশেষ খবর