রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

অবশেষে চার লেন হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

কাজ শুরু জানুয়ারিতে অর্থায়নে এডিবি

নিজামুল হক বিপুল

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। কাজ শুরু হচ্ছে আসছে জানুয়ারিতে। এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে চুক্তি করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এখন চলছে ভূমি অধিগ্রহণ ও সমীক্ষার কাজ। এর মধ্য দিয়ে এ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার যে অনিশ্চয়তা গত কয়েক বছর ধরে চলছি তা দূর হয়েছে। সড়ক পরবিহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ২২৬ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করতে সম্প্রতি ইআরডির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এডিবির। চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর এ মহাসড়কের উন্নয়নে দৃশ্যমান কাজ শুরু করবে এডিবি। সূত্র জানায়, চার লেন করতে এডিবি ২০১৩-১৪ সালের দিকে প্রথম সমীক্ষা করে। এরপর এ মহাসড়কের কাজ কারা করবে, এ নিয়ে নানান জটিলতা তৈরি হলে এডিবি আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। এখন আবার যখন তারা কাজটি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সে কারণে আগের সমীক্ষার পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন। তাই নতুন করে সমীক্ষা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে চার লেনের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ভূমি অধিগ্রহণ ও সড়কের পাশের ইউটিলিটি স্থানান্তরের জন্য ইতিমধ্যে সরকার ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ৮৫১ কোটি টাকা। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমি অধিগ্রহণ ইউটিলিটি স্থানান্তরের কাজ চলছে। সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করতে শুরুতে এডিবির সঙ্গেই কথা হচ্ছিল সরকারের। কিন্তু মধ্যে চীনের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে এ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার জন্য ২০১৭ সালের অক্টোবরে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছিল সরকার। কথা ছিল ২০১৮ সালের শুরুতেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। কিন্তু চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রকল্পের জন্য যে ব্যয় প্রস্তাব করেছিল তা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের প্রাক্কলনের চেয়ে প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি। তাই ওদের প্রস্তাবটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফা আলোচনাও হয়। কিন্ত কোনো সুরাহা হয়নি, কাজও ঝুলে যায়। একপর্যায়ে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্পের কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য ডিপিপিও তৈরি করা হয়। সেটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলেও সেখান থেকে আরও কিছু সংশোধনী চেয়ে ফেরত পাঠানো হয়। সড়ক বিভাগ তা সুবিন্যস্ত করে ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। কিন্তু প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে যাওয়ার পর তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী ওই প্রকল্পটি অনেক ব্যয়বহুল উল্লেখ করে এর জন্য বাইরের কোনো অর্থায়ন পাওয়া যায় কিনা দেখতে আদেশ করেন। এর পরপরই এ প্রকল্পটি ঝুলে যায়। অথচ কথা ছিল সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে গত জাতীয় নির্বাচনের আগেই প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। এখন প্রকল্পে অর্থায়ন করবে এডিবি।

সর্বশেষ খবর