মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে ৫০ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত

উপজেলা নির্বাচনে ১২ বিদ্রোহী প্রার্থীকে ক্ষমা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে ৫০ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত

সারা দেশের মতো চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলায় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে জড়িত এমন ৫০ জন বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা বা দায়িত্বশীলদের চিঠি দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে প্রকাশিত বইয়ের ফটোকপি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে পাঠানো হবে। অন্যদিকে বৃহত্তর (চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার) চট্টগ্রামের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া ১২ বিদ্রোহী প্রার্থীকে ক্ষমা করে দিয়েছে আওয়ামীলীগ। চট্টগ্রামে উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করা ১২ জন বিদ্রোহী প্রার্থী শো-কজের জবাবে অঙ্গীকারসহ ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজ করবেন না বলে দলীয় সভাপতির কাছে অঙ্গীকারনামাসহ ক্ষমা চাওয়ায় তাদেরকে মাফ করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার ক্ষমতায় আসার পর বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ আওয়ামী লীগের কিছু শীর্ষ নেতা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দলের ভেতরে সুবিধাবাদী-বিতর্কিতদের স্থান দিয়েছেন। তাদের কর্মকান্ডে বিতর্কিত হচ্ছে দল। এতে সুবিধাবাদী-বির্তকিতদের শনাক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, অনুপ্রবেশকারী, বির্তকিত নেতা কারা? আদৌ কি বর্তমান সময়ের আলোচিত সমালোচিত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। নাকি দায়সারা এক তালিকা তৈরি করে নাম প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা করলে অনেক হাইব্রিড চিহ্নিত হয়ে যাবে। তবে দলকে রক্ষার জন্যই দ্রুত বির্তকিতদের বের করতে হবে বলে জানান তারা। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোন ধরণের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা এখনও পাইনি। পেলে দলীয় নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কাজ করা হবে। তিনি বলেন, যতদূর শুনেছি, চট্টগ্রামে শীর্ষ থেকে তৃমনূল পর্যন্ত বির্তকিত, অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড এবং বর্তমান সময়ের আলোচিত-সমালোচিত অনেক ব্যক্তি রয়েছেন। সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের বিষয়েও তৈরি করা তালিকায় এমন চিহ্নিত-সমালোচিত এবং দলকে বির্তকিত করা ব্যক্তিদের নাম সেই তালিকায় নেই। বৃহত্তর চট্টগ্রামে (চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশে তিন বিদ্রোহী প্রার্থী চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছেন। এতে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল, চন্দনাইশে এলডিপি থেকে এসে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার। অন্যদিকে শোকজ করা হয়েছে বাঁশখালী উপজেলায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম, বোয়ালখালীতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের এডহক কমিটির সহ সভাপতি এসএম নুরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন। কক্সবাজারের সদর উপজেলা, টেকনাফ, রামু, মহেশখালী ও চকরিয়া উপজেলার পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতাকেও শো-কজ করা হয়েছিল। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচন করায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ১২ জনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শো-কজ করা হয়। এর জবাবে ভবিষ্যতে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কার্যকলাপ করবেন না মর্মে অঙ্গীকারনামা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। তাই এবারের মতো বিদ্রোহীদের মাফ করে দেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর