জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে তার বাসভবন অবরুদ্ধ করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় পুরনো রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে স্থাপিত ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ’ থেকে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে উপাচার্য ভবনের গেটের সামনে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন উপাচার্য সমর্থক অর্ধশতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। পাশাপাশি যে কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করছে। তবে পুলিশ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি। তিনি অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’ ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা উপাচার্যকে পদত্যাগের সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কর্ণপাত করলেন না। আজকের অবস্থানে একদিনে আসিনি। বরং অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম এই অবস্থানে আসতে বাধ্য করেছেন। আমরা আজকে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অবরুদ্ধ করেছি। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত তাকে অবরুদ্ধ করে রাখব। অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম যখন বাসভবন ছাড়বেন তখন তিনি আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকবেন না।’ প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটে এমনটা আমরা কখনোই চাই না। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি সরে যাওয়ার জন্য।

কিন্তু তারা বলেছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় একশ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এখানে আছি। পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। সংকট সমাধানে শিক্ষামন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি আলোচনার কথা বলেছেন। আমরা চাইব সেই আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান হবে।’

প্রসঙ্গত, জাবিতে চলমান সাড়ে ১৪শ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা ঈদ সেলামি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ গত তিন মাস ধরে লাগাতারভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে আসছে।