বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাস্টম হাউসের ভল্ট ভেঙে ১৯ কেজি সোনা চুরি

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

বেনাপোল কাস্টম হাউসের সংরক্ষিত এলাকায় সংঘটিত হয়েছে ভয়াবহ চুরি। রবিবার গভীর রাতে সংঘবদ্ধ চোরেরা কাস্টম হাউসের ভল্ট ভেঙে ১৯ কেজি ৩৮৫ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভল্ট ইনচার্জ সহকারী, একজন সিপাহি ও তিন অফিস সহকারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এরা হলেন ভল্ট ইনচার্জ সহকারী সাইফুল, সিপাহি পারভেজ, এনজিও কর্মী আজিবর, মহব্বত ও সুরত আলী।

কাস্টমস সূত্র জানায়, কাস্টম হাউসের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় রক্ষিত ভল্টের তালা ভেঙে বিপুল পরিমাণ সোনা, ডলার, টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা ও বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে গেছে চোরেরা। চোরেরা কক্ষে প্রবেশ করার আগেই সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ওই ভল্টে কাস্টমস, শুল্ক গোয়েন্দা, বিজিবি ও পুলিশের উদ্ধার করা সোনা, ডলার, অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা, কষ্টিপাথরসহ মূল্যবান দলিলাদি ছিল। ঘটনাস্থলে সোমবার সকাল থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার সকালে অফিস খোলার পর চুরির ঘটনা ধরা পড়ে। ঘটনা তদন্তে খুলনা থেকে ছুটে আসে সিআইডির তদন্ত টিমসহ পিবিআই, র‌্যাব, ডিবি পুলিশ। এর আগে বন্দর থানা পুলিশ কাস্টমস এলাকা ঘিরে রাখে। বেনাপোলের একাধিক সূত্র জানান, কাস্টম হাউস অসংখ্য সিসি ক্যামেরায় পূর্ণ একটি সংরক্ষিত এলাকা। আনসার, কাস্টমস যৌথভাবে পাহারায় থাকার পরও কীভাবে এ ধরনের দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটল তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। এলাকাবাসীর অভিযোগের আঙ্গুল কাস্টমসের দিকে থাকলেও তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নজর আরও গভীরে। ওই দিন কেন সিসি ক্যামেরা বিকল ছিল তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার দিনব্যাপী তদন্ত শেষে গভীর রাতে দলটির প্রধান সাংবাদিকদের জানান, ভল্টে প্রায় ৩০ কেজি সোনা, নগদ বাংলাদেশি টাকা, ১ কোটি টাকা মূল্যমানের ডলার এবং মূল্যবান মালামাল। এর মধ্য থেকে চোরেরা শুধু ১৯ কেজি স্বর্ণ নিয়ে গেছে। বিষয়টি রহস্যজনক। বাইরের চোর হলে সব মালামাল নিয়ে যেত। এ ছাড়া এতগুলো টাকা ফেলে রেখে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার বিকাল ৫টার দিকে ডিবি, সিআইডি, পিবিআই, র‌্যাব ও বেনাপোল বন্দর থানা পুলিশ ভল্টরুমে প্রবেশ করে। ওই কক্ষে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বেনাপোল কাস্টমসে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন বেনাপোল কাস্টস হাউসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী। তিনি বলেন, কাস্টমসের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ি, ভায়াগ্রা চক্রের অপতৎপরতা ও কাস্টমস কমিশনারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য একটি চক্র এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় যুগ্ম-কমিশনার শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যশোর ডিএসবির (এএসপি) তৌহিদুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের জানান, শুক্র, শনি ও রবিবার অফিস বন্ধ থাকায় এ তিন দিনের মধ্যে চোর চক্র চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। চুরির ঘটনায় কাস্টম হাউসের একজন ইন্সপেক্টর, একজন সিপাহিসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর