চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা বা গাফিলতির কারণ শনাক্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এজন্য ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে আদালত। ওই কমিটিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজনকে সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে আদেশে। কমিটিকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়। আদালতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাঈনুল হাসান।
পরে ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত মে মাসে ডেঙ্গু বিষয়ে হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির জন্য এসেছিল। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কী কাজ হয়েছে, সে বিষয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছি।’ তিনি বলেন, আদালত শুনানি নিয়ে বলে, সরকারি হিসাবে ১১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর পেছনে নিশ্চিয়ই কোনো অবহেলা ছিল। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যর্থতা বা গাফিলতি আছে কিনা, তা তদন্তে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করে দিয়েছে আদালত। তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটি ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ, আইসিডিডিআরবি, গণস্বাস্থ্য বিভাগ, প্ল্যান প্রটেকশন উইংয়ের সহযোগিতা নিতে পারবে। এর বাইরেও যাদের যাদের সহযোগিতা দরকার তাদেরও সহযোগিতা নিতে পারবে কমিটি। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। যেখানে সরকারি হিসাবে ১১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানানো হয়। গত ২৮ আগস্ট এক আদেশে আদালত ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া কাজের অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল। ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক শুরু হলে গত ৪ জুলাই স্বতঃপ্রণোদিত এক আদেশে ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ এডিস মশা নির্মূল ও ধ্বংসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট। এরপর কয়েক দফায় এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং নির্দেশনা দেয় আদালত। আদালতের আদেশে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশ থেকে ওষুধ এনে ডেঙ্গু নিধনে কাজ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
