বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আন্দোলন অব্যাহত জাহাঙ্গীরনগরে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তার বাসভবন অবরোধ, অবরোধকারীদের ওপর শাখা ছাত্রলীগের হামলা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণার অষ্টম দিন পার হয়েছে গতকাল। বিকাল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিক অনুষদের লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২১ নভেম্বরের মধ্যে বন্ধ আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তদন্তের কথা বলা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। শুধু আর্থিক কেলেঙ্কারি নয়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর হামলার মদদ দেওয়া, অদক্ষ ও অযোগ্য ভারপ্রাপ্ত প্রশাসন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করা, সিনেট পূর্ণাঙ্গ না করাসহ নানাবিধ কারণে এই উপাচার্যকে সরে যেতে হবে। এদিকে দুপুরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অলিউর রহমান সান বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক এই আন্দোলনে হামলা করা হয়েছে। এরপর হল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেও এই আন্দোলন বন্ধ করতে পারেনি। শুধু দুর্নীতি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যে অচলাবস্থা সেজন্যই এই উপাচার্যের পদত্যাগ করা উচিত।’ এ সময় আন্দোলনরত দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘এখানে যে আন্দোলন হচ্ছে তা বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার আন্দোলন। প্রশাসন ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে আবারও সবাই আন্দোলনে আসবে। সরকারের উচিত তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত চালু করে তা সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল করা।’ সমাবেশে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা ইউজিসি থেকে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। এদিকে আন্দোলনের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবু আমাদের আন্দোলন থেমে যায়নি। এত বাধার পরও ন্যায়ের পক্ষের এ সংগ্রাম চলবে।’ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন রুনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক তারেক রেজা, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী), জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জাবি শাখার নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর