বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ফুলকোর্ট সভায় উঠেছে আজ

পদোন্নতি পাচ্ছেন ৬৫২ বিচারক

আরাফাত মুন্না

পদোন্নতি পাচ্ছেন অধস্তন আদালতের ৬৫২ বিচারক। এরই মধ্যে তাদের পদোন্নতি প্যানেল তৈরি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এই প্যানেল অনুমোদনের জন্য ফুলকোর্ট সভাও আহ্বান করা হয়েছে। এ সভায় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ৩৫৬ জন, সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ২১৮ জন এবং সহকারী জজ থেকে সিনিয়র সহকারী জজ পদে ৭৮ জনের পদোন্নতি ফাইল প্যানেল আকারে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসন ভবনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের নিয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বাছাই কমিটি এসব বিচারককে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে ১৭ অক্টোবর বাছাইয়ের কাজ শেষ করেন। এ কমিটির অপর তিন সদস্য হলেন- হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি মামনুন রহমান, বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার। এবার পদোন্নতির প্যানেলে যুক্ত হওয়া বিচারকেরা বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের তৃতীয়, চতুর্থ ও সপ্তম ব্যাচে নিয়োগ পেয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, ফুলকোর্ট সভায় এ সুপারিশ অনুমোদনের পর পাঠানো হবে আইন মন্ত্রণালয়ে। এরপর এ সুপারিশ আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের অনুমোদনের পর এসব বিচারকের পদোন্নতি প্যানেলের প্রজ্ঞাপন জারি হবে। এরও পরে আসন শূন্য সাপেক্ষে ওই প্যানেল থেকে বিচারকদের পদোন্নতি দেওয়া হবে। বিচার বিভাগে বর্তমানে ১ হাজার ৭৯০টি বিচারকের অনুমোদিত পদ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিধি অনুসারে, সাধারণত বছরে দুই থেকে তিনবার ফুলকোর্ট সভা হয়ে থাকে। সভায় উপস্থিত বিচারপতিরা উচ্চ ও অধস্তন আদালতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ফুলকোর্ট সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ সভায় অধস্তন আদালতের পদোন্নতির বিষয়টি উঠবে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক ক্যালেন্ডার অনুমোদনের জন্য এ সভায় উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির যোগ্যতা শিথিল করে সরকার। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে শীর্ষ তিন স্তরের বিচারকদের পদোন্নতির যোগ্যতা শিথিল করতে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা বিধান এবং চাকরির অন্য শর্তাবলি) বিধিমালা, ২০০৭’-এ সংশোধনী আনে আইন মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ সংশোধিত এ বিধান অনুযায়ী জেলা ও দায়রা জজ বা সমপর্যায়ের অন্যান্য বিচারক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে এক বছরসহ মোট ১৩ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আগে এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা পদে দুই বছরসহ মোট ১৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হতো। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বা সমপর্যায়ের অন্যান্য বিচারক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এখন যুগ্ম জেলা জজ পদে ছয় মাসসহ মোট ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আগে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হতো যুগ্ম জেলা জজ পদে দুই বছরসহ মোট ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা। আগে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি পেতে হলে সিনিয়র সহকারী জজ হিসেবে দুই বছরসহ মোট সাত বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হতো। এখন সিনিয়র সহকারী জজ হিসেবে চাকরির অভিজ্ঞতা ছয় মাস করা হয়েছে। এ ছাড়া সহকারী জজ থেকে সিনিয়র সহকারী জজ হতে হলে পাঁচ বছরের বিচারকাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।

সর্বশেষ খবর