শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বুলবুলের তাণ্ডবে ৯৩ হাজার কি.মি বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুলবুলের তাণ্ডবে ৯৩ হাজার কি.মি বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বাংলাদেশে আঘাত করার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন দেশের বেশ কয়েকটি জেলা-উপজেলার মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পল্লী বিদ্যুতের বরিশাল-২, পিরোজপুর ও বাগেরহাট এই তিন জেলার প্রায় এক লাখ ৯৩ হাজার গ্রাহকের ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনায় গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ নেই। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, বুলবুলের কারণে দেশের ১৩টি উপজেলার বিদ্যুতের লাইন, খুঁটি, ট্রান্সফরমার ও মিটারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অঙ্কে এই ক্ষতির পরিমাণ ১২ কোটি। তবে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় তিন হাজার কর্মী বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে দিনরাত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে কাজ করছেন। শুক্রবার ১৫ নভেম্বর রাত থেকে দক্ষিণের এই জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। তবে আজ শনিবারের মধ্যে সব গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ নাও পেতে পারেন। বিশেষ করে যেসব গ্রাহক এখনো অভিযোগ করেননি এমন প্রায় ১০ হাজারের মতো গ্রাহকের বিদ্যুৎ পেতে আরও পাঁচ থেকে ছয় দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে বলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ধারণা করছেন। পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা যায়, বুলবুলের তা বে দক্ষিণের জেলা-উপজেলাসহ চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের মোট ৯৩ হাজার কি.মি. বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত শেষে বর্তমানে আরও ২ হাজার ২০০ কি.মি লাইনের মেরামত কাজ চলছে। মূলত দেশের দক্ষিণের এই জেলাগুলোতে গাছের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এবং গ্রামাঞ্চলে ছনের কাঁচা ঘর থাকায় ঝড়ে বিদ্যুতের লাইন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া এসব এলাকায় পর্যাপ্ত শ্রমিকের অভাবে বিদ্যুতের লাইন মেরামত করতে কিছুটা বেশি সময় লাগছে। গাছের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে আগে গাছ পরিষ্কার করে তারপর বিদ্যুতের খুঁটি বসাতে হচ্ছে। আবার এই এলাকাগুলোতে লম্বা গাব গাছগুলো ঝড়ে ভেঙে পড়ায় সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বরিশালের ৩টি উপজেলা এবং পিরোজপুর ও বাগেরহাটের ১৩টি উপজেলা মিলিয়ে এক লাখ ৯৩ হাজার পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন। এর মধ্যে বরিশালের গ্রাহক ২৮ হাজার, পিরোজপুরের ৯০ হাজার এবং বাগেরহাটের ৭৫ হাজার গ্রাহক। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী অনজন কান্তি দাশ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গতকাল রাত ১০টা থেকে ১১টা নাগাদ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর প্রায় এক লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। আর বাকি ৯৩ হাজার গ্রাহক ১৬ নভেম্বর শনিবার বিদ্যুৎ পাবেন বলে আমরা আশা করছি। বর্তমানে এই তিন জেলায় পল্লী বিদ্যুতের শ্রমিক, লাইনম্যান, লাইন ত্রু মিলিয়ে মোট ২ হাজার ৯৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামতের কাজ করছেন। এর মধ্যে বরিশাল-২ এ ৮৫০ জন, পিরোজপুরে ১২০০ এবং বাগেরহাটে মোট ৯০০ জন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মেরামত কাজ করছেন।

সর্বশেষ খবর