শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বিপন্ন আবাসিক পাখি উদয়ী পাকড়া ধনেশ

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বিপন্ন আবাসিক পাখি উদয়ী পাকড়া ধনেশ

বাংলাদেশের আবাসিক পাখি উদয়ী পাকড়া ধনেশ। এক সময় এদের সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেশি দেখা যেত। কিন্তু কয়েক দশক ধরে এদের বংশবৃদ্ধি কমে গেছে। এখন বিপন্নের  তালিকায় এদের নাম উঠেছে। এরা অঞ্চল ভেদে কাউ ধনেশ নামেও পরিচিত। উদয়ী পাকড়া ধনেশের ইংরেজি নাম ঙৎরবহঃধষ ঢ়রবফ যড়ৎহনরষষ. আর বৈজ্ঞানিক নাম অহঃযৎধপড়পবৎড়ং ধষনরৎড়ংঃৎরং. বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল,  ভুটান, মিয়ানমার, চীন, মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণÑপূর্ব এশিয়ায় এদের বিচরণ রয়েছে। সম্প্রতি কাপ্তাই উপজেলার নেভী সড়ক থেকে এই উদয়ী পাকড়া ধনেশের ছবি তুলেছেন বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী লিসান আসিব খান। পাখি বিশেষজ্ঞরা জানান, পৃথিবীতে ধনেশের পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রজাতি হলো উদয়ী পাকড়া ধনেশ। আর ধনেশের এ একটি প্রজাতিই আমাদের দেশে আছে। এদের দৈর্ঘ্য ৯০ সেন্টিমিটার। শরীরের উপরের দিক চকচকে কালো। আর  নিচের দিকের রঙ  সাদা। গলায় পালকহীন নীল চামড়ার পট্টি রয়েছে। চোখের চারপাশে ও গলায় নীলাভ-সাদা চামড়া দেখা যায়। চোখের তারা লালচে। লম্বা ঠেটের আগা কালো। চোখের রঙ বাদামী। এ প্রজাতির পাখিরা সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় থাকে। বনের ছোট বড় সব প্রকারের নরম ফল এদের পছন্দের খাবার। এছাড়া পাখির ছানা, ডিম, ইঁদুর, ব্যাঙ, সরিসৃপ খেয়ে জীবন ধারণ করে। এপ্রিল ও মে মাস এদের প্রজননের সময়। এ সময় এরা মরা গাছের উঁচুতে গর্ত করে বাসা বাঁধে। দুই থেকে তিনটি ডিম দেয়। স্ত্রী ধনেশ বাসায় ঢুকে নিজের বিষ্ঠা দিয়ে বাসার প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেয়। ডিম পাড়া থেকে বাচ্চা বড় হওয়া পর্যন্ত মা ধনেশ ওই গর্তেই থাকে। আর ছোট একটি ফুটো দিয়ে বাবা ধনেশ স্ত্রী পাখি ও বাচ্চা পাখির খাবারের জোগান দেয়। আর ডিম থেকে ছানা বের হওয়ার পর বাবা ধনেশ বাসার গর্তের মুখ ভেঙে দেয়। বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী লিসান আসিব খান বলেন, পাহাড়িরা এ পাখিটি বেশি খায়। তারা যখন বাবা পাখিকে ধরে নিয়ে যায় তখন বাচ্চা পাখি আর খাবার পায় না। তাই এদের বংশ কমে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর