রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সুরে মাতিয়ে হলো শেষ

মোস্তফা মতিহার

সুরে মাতিয়ে হলো শেষ

তিন রাতের ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব-২০১৯ এর পর্দা নেমেছে। গতকাল গভীররাত পর্যন্ত আর্মি স্টেডিয়ামের লাখো মানুষকে মাতোয়ারা করে রাখেন দেশ-বিদেশের বিখ্যাত শিল্পীরা। সুফি-রক ফিউশনের সুরের সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য সন্ধ্যা থেকেই শ্রোতাদের ছিল অধীর অপেক্ষা। পাকিস্তানের গানের দল ‘জুন্নুন’ কখন মঞ্চে আসবে, কখন সুরের সমুদ্রে ঝড় তুলবে- অগণিত সুরপ্রেমীর ছিল এমনই আকাক্সক্ষা। অবশেষে রাত সাড়ে ১০টায় মঞ্চে আসে ‘জুন্নুন’। উপমহাদেশ কাঁপানো পাকিস্তানের এই গানের দলের উপস্থিতিতে উন্মাদনার ঢেউ খেলে যায় গোটা স্টেডিয়ামে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ স্টেডিয়ামের দর্শক-শ্রোতারা নেচে আর করতালি দিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। সেই উচ্ছ্বাসে সুরের মূর্ছনায় নতুন মাত্রা এনে দেয় ত্রিশ মিলিয়ন বিক্রির রেকর্ডধারী ‘আজাদী’ অ্যালবামের মধ্য দিয়ে সংগীতের দুনিয়ায় নিজেদের দাপটের কথা জানান দেওয়ার এই ব্যান্ডটি। ‘হে খোদ তু শাহি হে’ সুফি গানটি দিয়ে সুর দরিয়ায় ঝড় তোলে ‘জুন্নুন’। এরপর ‘অ্যায়সা হুয়া হি হে মেরা দিল দুখায়া ও ছাইউনি’ ‘দামাদাম মাস্তকালান্দার’ ‘তু মেরা সাস হে’সহ বেশ কয়েকটি গানে সুরের সমুদ্রে ঢেউ তোলে তারা। পুরো স্টেডিয়ামকে সুরের চাদরে ঢেকে দিয়ে নিজেদের পরিবেশনার ইতি টানে পাকিস্তানের তথা উপমহাদেশের সংগীতে কাঁপন ধরানো এই ব্যান্ডটি। আর ‘জুন্নুন’ এর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে তিন রাতের ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব ২০১৯’ এর পর্দা নামে। এর আগে সন্ধ্যায় আবদুল মালেক কাওয়ালের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় শেষ রাতের আসর। ভাবের নদীতে ঢেউ তুলে এই শিল্পী  গেয়ে শোনান গান ‘ইশকে নবী ক্যায়া ভুল গায়ি’ ‘হযরত-এ-ইসমে আযম’ ‘ইয়া আলী নূর-এ-মোহাম্মদ হাবিব আল্লাহ’ ‘বাবা মওলানা মওলানা এই ভুবনে নেই তোমার তুলনা’ ‘খাজা পিয়াহে দিল্লিতে হে খাজা পিয়া’সহ বেশ কয়েকটি গান। এ রাতের দ্বিতীয় রাতের পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসে ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করা রাশিয়ার লোকগানের দল সাত্তুমা।

 ‘নিওফোক’ টাইপের গান দিয়ে মঞ্চ মাতিয়ে এদেশীয় সংগীতানুরাগিদের বিনোদিত করে এই দলটি। ম্যান্ডোলিন, বাঁশি, ভায়োলিনের সংযোগে রাশিয়ার লোকসংগীতের সুধা আর্মি স্টেডিয়ামে ছড়িয়ে দেয় কারেলিমা অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় এই ব্যান্ডটি।

এরপর মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের চন্দনা মজুমদার। লালনের গান ‘জগৎ ভঙ্গিতে ভুলাইলেন সাঁই’ দিয়ে শুরু করে দেশীয় এই লোকসংগীতশিল্পী একে এক গেয়ে শোনান ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ ‘সিরনি খাওয়ার লোভ যার আছে’ ‘আমি প্রথম যেদিন দেখেছি মনে আপন ভেবেছি’ ‘আমার মুর্শিদ পরশমণিগো লোহারে বানাইলো কাঞ্চা সোনা’ ‘সোনারও পালঙ্কের ঘরে’সহ দেহতত্ত্ব, লালন ও বিচ্ছেদি গানের পরিবেশনা শেষে মঞ্চ ত্যাগ করেন চন্দনা মজুমদার।

সান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এবারের উৎসবের স্পন্সর ছিল মেরিল। উৎসবে অংশ নিয়েছেন ছয় দেশের প্রায় দুই শতাধিক শিল্পী। তিন রাতের এই আসরটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে মাছরাঙা টেলিভিশন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর