বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
সভাপতি সেলিম, সম্পাদক একরাম

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সংঘর্ষ

নোয়াখালী প্রতিনিধি

বিক্ষিপ্ত সহিংস ঘটনার মধ্যে গতকাল নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ও একরামুল করিম চৌধুরী। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায়  উভয়পক্ষের অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হন।  দীর্ঘ ৫ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীকে সাজানো হয় ভিন্ন সাজে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে অর্ধলক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে মাইজদীতে। সকালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম সেলিমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম এমপি, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি এবং কেন্দ্রীয় সদস্য মির্জা আজম এমপি, এইচ এম ইব্রাহিম এমপি, আয়েশা ফেরদৌস এমপি, মামুনুর রশীদ কিরণ এমপি, মোরশেদ আলম এমপি, নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন ও পৌর সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু সঞ্চালনা করেন। সম্মেলন শেষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী তিন বছরের জন্য পুনরায় অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম সেলিমকে সভাপতি এবং একরামুল করিম চৌধুরী এমপিকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন। এর আগে সকালে সম্মেলনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেলের জজকোর্ট সড়ক থেকে অনুসারীরা মিছিল নিয়ে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছিল। একই সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সদর-সুবর্ণচর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীও সম্মেলন স্থলে যাচ্ছিলেন। নোয়াখালী টাউন হলের মোড়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হলে প্রথমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পরে সংঘর্ষ বেধে যায়। এক পর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল অভিযোগ করেন, ‘বিনা উসকানিতে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে।’ একরামুল করিম চৌধুরী এমপি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সম্মেলনকে বানচাল করার উদ্দেশ্যেই তারা শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল।’ পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল।’ সংঘর্ষ চলাকালে সম্মেলনের ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৫৩ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান, হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম।

সর্বশেষ খবর