বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বায়ুদূষণ কমাতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ

১৫ দিনের মধ্যে ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ ও ৭ দিনের মধ্যে রাজধানীর সড়কে জমে থাকা আবর্জনা অপসারণ করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকার বায়ু দূষণ কমাতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। কমিটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এলাকায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে চালানো সব ইটভাটা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এক রিট মামলার সম্পূরক আবেদনের শুনানি করে গতকাল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। সেই সঙ্গে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) এ সম্পূরক আবেদনে বায়ু দূষণ রোধে সিটি করপোরেশনকে রাস্তা, ফুটপাথ, ফ্লাইওভার, ওয়াকওভারের যেসব জায়গায় ধুলাবালি, ময়লা বা বর্জ্য-আবর্জনা জমিয়ে রাখা হয় বা জমে থাকে সেসব ময়লা-আবর্জনা সাত দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সাঈদ আহমেদ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন তৌফিক ইনাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকায় বায়ু দূষণ রোধে আমরা পাঁচটি নির্দেশনা চেয়েছিলাম। আদালত তিনটি নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দিয়েছে। সিটি করপোরেশন যেভাবে পানি ছিটাচ্ছে তা রাস্তায় শুধু কাদার সৃষ্টি করে, সড়ক বিভাজনে থাকা গাছে জমে থাকা ধুলাবালি যায় না। এ জন্য পাইপ লাগিয়ে ওপর থেকে পানি ছিটানোর নির্দেশনা চেয়েছিলাম। তিনি বলেন, ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ২১ জানুয়ারি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেয়। ঢাকা শহরে যারা বায়ু দূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদফতরকে সেদিন নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে পুরোপুরি ঘিরে ফেলতে বলা হয়। পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে দুবার করে পানি ছিটাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। ঢাকা শহরের বায়ু দূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ু দূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সর্বশেষ খবর