বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ

শীর্ষ পদে দৌড়ঝাঁপ এগিয়ে সাদেক খান ওয়াকিল উদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

শীর্ষ পদে দৌড়ঝাঁপ এগিয়ে সাদেক খান ওয়াকিল উদ্দিন

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে আসতে শেষ মুহূর্তে দৌড়ঝাঁপ করছেন এক ডজন প্রার্থী। নতুন নেতৃত্ব নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসছেন তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে কৌতূহল বাড়ছে। পদপ্রত্যাশীরা গণভবন ও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের বাসাবাড়িতে যাওয়া-আসা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কর্মী-সমর্থক নিয়ে তারা ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোডাউন করছেন। পোস্টার, ফেস্টুন টানিয়েছেন রাজধানীজুড়েই। নিজেদের যোগ্য প্রমাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন যে যার মতো। আগামী ৩০ নভেম্বর বেলা ১১টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশনেই নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হবে। এবার ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এমপি, সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসানসহ অনেকেই। সাধারণ সম্পাদক পদে জোর আলোচনায় রয়েছেন মো. ওয়াকিল উদ্দিন ও এস এ মান্নান কচি। এ ছাড়া অনেকেই জোর তদবির শুরু করেছেন শীর্ষ পদে আসতে। 

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভাপতি প্রার্থী সাদেক খান মোহাম্মদপুর এলাকার দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলেন। বর্তমান ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসনে নৌকা নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। বিগত সময়ে চারদলীয় জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা প্রশংসনীয় ছিল বলে নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। সভাপতি পদে তিনি এগিয়ে রয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা সে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাব।  সাধারণ সম্পাদক পদে জোর আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়াকিল উদ্দিন। বৃহত্তর গুলশান, বনানী, ভাষানটেকসহ ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাছে কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে তিনি আস্থা অর্জন করেছেন। ১৯৬৯ সালে তেজগাঁও কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগে যোগদানের পর ’৬৯-এর গণআন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। পরে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে কমান্ডার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে বৃহত্তর গুলশান থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ১৯৭৫ সালে ওই থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. ওয়াকিল উদ্দিন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর বর্বরোচিত হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জেল-জুলুমসহ পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এ নেতা। ১৯৮৩-৮৮ সালে ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান ও ১৯৮৮-২০০১ সাল পর্যন্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও ১৯৯৩-২০০৩ সাল পর্যন্ত গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৪-২০১৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩-৯৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি মামলা হয়। জানা যায়, ২০০৪ সালের বর্বরোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত হন তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক, ক্রীড়া ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও জড়িত ওয়াকিল উদ্দিন। তিনি লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য, উত্তরা বারিধারা ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা, গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন পদে আছেন। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মো. ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি না থাকায় আমি এলাকার মানুষের পাশে ছিলাম। বৃহত্তর গুলশান, বনানী এলাকার আওয়ামী লীগকে সংগঠিত ও শক্তিশালী করেছি। তিনি বলেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে দায়িত্ব দেন তাহলে আমানত হিসেবে পালন করব। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

সর্বশেষ খবর