বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এমপি প্রার্থীকে পিছমোড়া বেঁধে পেটাল ছাত্রলীগ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

এমপি প্রার্থীকে পিছমোড়া বেঁধে পেটাল ছাত্রলীগ

কুমিল্লার তিতাস উপজেলা পরিষদের সামনে বিগত সংসদ নির্বাচনের একজন প্রার্থীকে হাত-পা বেঁধে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার রবিউল ইসলাম একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ (তিতাস-হোমনা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে নির্বাচন করেন। তিনি তিতাস উপজেলার আমিরাবাদ গ্রামের মো. আলম হোসাইনের ছেলে। তাকে বেঁধে পেটানোর ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিতাস উপজেলা পরিষদের এক কিলোমিটার দূরে এক একর ৭২ শতাংশ জমি নিয়ে খেলার মাঠ রয়েছে। ওই মাঠের এক পাশে একটি শহীদ মিনার ছিল। উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার শহীদ মিনারটি ভেঙে ওই খেলার মাঠ দখল করে হাউজিং প্রকল্প করার চেষ্টা করেন। সরকারি মাঠ রক্ষায় তিনি পারভেজ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত। পরে হাই কোর্টে মামলা করলে ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত খেলার মাঠের পক্ষে রায় দেয়। এই রায়ের বিপরীতে বিবাদী পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টও মাঠের পক্ষে রায় দেয়। পরবর্তীতে পারভেজ হোসেন সরকার মাঠটি দখলে নেন। এরপর রবিউল ইসলাম কুমিল্লা জেলা প্রশাসনকে জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন মাঠটি ফিরিয়ে নিতে। গত ২১ নভেম্বর মাঠটির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তাকে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন সাদ্দামের নেতৃত্বে পরিষদের সামনে হাত-পা বেঁধে পেটায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ও চেয়ারম্যানের অনুসারীরা। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে। অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন সাদ্দাম বলেন, আমাদের বিরোধ হবে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। রবিউল নামের কাউকে মারধরের বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান তিনি। তিতাস থানার ওসি সৈয়দ আহসান উল্লাহ জানান, উপজেলা পরিষদের সামনে রবিউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে কিছু লোকজন মারধর করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। কিন্তু ওই ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। রবিউল ইসলামের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকারের মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।  জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, সরকারি সম্পত্তি রক্ষা মামলার বাদীকে মারধরের বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সর্বশেষ খবর