রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

কী মধু স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে!

নিজস্ব প্রতিবেদক

কী মধু স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে!

কী মধু আছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে! যে কারণে সংস্থার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আগামী বছরের ২৫ জানুয়ারি তার চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অথচ তিনি এখন থেকেই তৎপর চাকরির মেয়াদ বাড়াতে। অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, তিনি নিয়োগ পেলে পুরো অধিদফতরকেই লুটেপুটে খাবেন। 

অভিযোগ আছে, নজরুল ইসলাম তার ৩১ বছরের চাকরি জীবনের ২৯ বছরই কাটিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান দফতরে। এই সুযোগে তিনি হয়ে উঠেছেন ওই দফতরের নিয়ন্ত্রক। তার ইশারায় অনেক কিছুই হয়। তিনি সিন্ডিকেট করে সবকিছু নিজের কবজায় রেখেছেন। নজরুল ইসলাম অধিদফতরের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি হওয়ায় প্রায় প্রত্যেক উন্নয়নমূলক কাজেই কমিশন বাণিজ্য করে থাকেন। মিস্টার ফাইভ পার্সেন্ট হিসেবে অধিদফতরের সবার কাছে পরিচিত তিনি। গত কয়েক বছরে তিনি পিপিআর লঙ্ঘন করে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে চার হাজার কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নজরুল ইসলাম মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি হওয়ার কারণে তার অপছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নানা ছল-চাতুরীতে বাছাইয়ে বাদ দিয়ে নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেন কমিশনের বিনিময়ে। স্বাস্থ্য অধিদফতরে নজরুল সিন্ডিকেটের কথা সবার মুখে মুখে। তিনি নির্দিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢালী কনসট্রাকশন, কেটি এমিস (জেভি), মাইশা কনসট্রাকশন, পোদ্দার এন্টারপ্রাইজ, এমএস এন্টারপ্রাইজ, কবির ট্রেডার্স, গুণ গুণ ট্রেডার্স, অনিক ট্রেডিং করপোরশেন, ঢাকা ওপেন স্টুডিও এবং খাজা বিলকিস রাব্বী নামে প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাজ করান। গত দুই বছরে তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটিকে ছয় থেকে ১০টি পর্যন্ত কাজ দিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠলেও তিনি কখনো সেটা আমলে নেননি। নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিএনপি-জামায়াতের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। তার বাড়ি যশোরে। তিনি এখন নিজেকে আওয়ামী লীগের বড় সমর্থক পরিচয় দিয়ে দুর্নীতি অনিয়ম করে যাচ্ছেন। দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ইতিমধ্যে তিনি রাজধানী ঢাকার গুলশান, বনানী এলাকায় একাধিক বাড়ির মালিক। একই ভাবে সাভার ও আশুলিয়ায় বিপুল পরিমাণ জমির মালিক হয়েছেন। অভিযোগ আছে, দেশের বাইরে মালয়েশিয়াতেও তার বাড়ি এবং বিনিয়োগ রয়েছে। এ রকম একজন কর্মকর্তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দিতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদনও করেছেন দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, দফতরে অন্তত আরও আট জন কর্মকর্তা রয়েছেন যারা দক্ষ ও যোগ্য। যারা নজরুল ইসলামের জন্য কোণঠাসা।

সর্বশেষ খবর