রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

মাল্টা বাগানের জমির আইলে পেঁপে চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

মাল্টা বাগানের জমির আইলে পেঁপে চাষ

মাল্টা বাগানের জমির আইলে পেঁপে চাষ করে বাম্পার ফলন ফলিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বগুড়ার শাজাহানপুরের জোকা গ্রামের আবু জাফর মাস্টার। তার বাগানের প্রতিটি গাছে গড়ে দেড় মণ পেঁপে ধরেছে। এমন ফলন ফলিয়ে যে কেউ এক বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করে এক বছরেই হবেন লাখপতি। হু হু করে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে চারা। জোকা গ্রামের আবু জাফর মাস্টার। তার আবাদী জমির পরিমাণ ১৬ বিঘা। বড় ছেলে কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম সজলের পরামর্শে ৬ বিঘা জমিতে এ বছর মাল্টার বাগান করেছেন। ৩ খ  জমিতে থাকা মাল্টা বাগানের আইলের চারধারে পতিত জমিতে তাইওয়ান থেকে আমদানিকৃত ফাষ্ট লেডি ভ্যারাইটির হাইব্রিড পেঁপে লাগিয়েছেন। ৬ মাস বয়সী প্রতিটি পেঁপে গাছে গড়ে দেড় মণ পেঁপে ধরেছে। সেগুলো পাকতেও শুরু করেছে। প্রতি কেজি পাকা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায় আর সবজি হিসেবে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। আবু জাফর মাস্টার জানিয়েছেন, রোপণের ক্ষেত্রে চারা থেকে চারার দূরত্ব রাখতে হয় ৬ ফুট বাই ৬ ফুট। এ হিসেবে ৩৩ শতকের ১ বিঘা জমিতে ৩৬৩টি গাছ লাগানো যায়। প্রতিটি গাছে দেড় মণ পেঁপে ফললে পেঁপের মোট উৎপাদন দাঁড়ায় ৫৪৪ মণ। সবজি হিসেবে কেজি প্রতি ১০ টাকা দামে বিক্রি করলেও এর বাজার মূল্য ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এছাড়া পেঁপের গাছের ফাঁকে সাথী ফসল হিসেবে আদা চাষ করা হলে ১ বিঘা জমিতে অন্তত: ৫০ হাজার টাকার আদা ফলানো যাবে। অপরদিকে জমি পত্তন, চারা ও বীজ ক্রয়, জমি চাষ, সেচ, সার ও কীটনাশক-সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ পড়ে মাত্র ৬০ হাজার টাকা। ফলে একজন ভূমিহীন চাষি অপরের জমি পত্তন নিয়ে পেঁপে চাষ করে বছরে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। শাহ্নগর সবজি নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন, শুধু আবু জাফর মাস্টারই নয়, শাজাহানপুরের দুরুলিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, শাহ্ নগর গ্রামের আব্দুস সালামসহ বেশ কয়েক ব্যক্তি ফাস্ট লেডি, সুইট লেডি, রেড লেডি ইত্যাদি ভ্যারাইটির হাইব্রিড পেঁপে চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তাদের এ সফলতা স্থানীয় সবজি চাষিদের ব্যাপকভাবে আগ্রহী ও উৎসাহিত করেছে।

ফলে গত ২ মাসে প্রায় ১০ হাজার হাইব্রিড পেঁপে চারা বিক্রি হয়েছে। চারার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নার্সারিগুলোতেও পেঁপের চারা উৎপাদনের প্রস্তুতি চলছে জোরেসোরে।  উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, এ ধরনের ফসল চাষ করে যে কেউ লাভবান হতে পারবেন। সেই সঙ্গে দেশে সবজি এবং ফলের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সর্বশেষ খবর