‘বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য দেশে ছাত্ররাজনীতি থাকতে হবে। তবে ছাত্ররাজনীতিকে জাতীয় রাজনীতি থেকে বিযুক্ত করতে হবে। রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হতে পারলে এ দেশের ছাত্ররাজনীতি এগিয়ে যাবে। গোলটেবিলে আরও বলা হয়, ছাত্ররাজনীতিতে এখন কৃষ্ণপক্ষ চলছে। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার মতো নিষ্ঠুর ও নির্মম সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ গোলটেবিলের আয়োজন করে। এতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণœ রাখতে ছাত্ররাজনীতি থাকতে হবে। বর্তমান সরকার নিজেদের পাপ আড়াল করতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চাচ্ছে। যাতে ছাত্ররা কথা বলতে না পারে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, একটি ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক প্রধান কীভাবে রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে পারে, এটা আমার মাথায় আসে না। রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হতে পারলে এ দেশের ছাত্ররাজনীতি এগিয়ে যাবে। সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি সব সময়ই নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু সেখানে কীভাবে আবরার হত্যাকা  হলো? এটা ছাত্ররাজনীতি না থাকার কারণে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি-জিএসদের এক প্লাটফর্মে আনতে চাই। কাউন্সিল অব এক্স ভিপি-জিএস অব ডাকসু নামে। এই আমরাই নতুনদের সামনের দিকে পথ দেখাতে পারব সেখান থেকে।’ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ছাত্ররাজনীতি মানে জাতীয় রাজনীতির বড় জায়গা। সত্যের পক্ষে তারুণ্যকে সব সময় থাকতে হবে। সঠিক কথা বলতে হবে। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা ঠিক হবে না। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, ছাত্ররাজনীতিকে জাতীয় রাজনীতি থেকে বিযুক্ত করতে হবে। বর্তমানে জাতীয় রাজনীতি লুটেরাদের হাতে চলে গে ছে। এ অবস্থা দূর করতে ঐক্য প্রয়োজন রয়েছে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি পেলে, ছাত্ররাজনীতি এ কলুষতা থেকে মুক্তি পাবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান এ সময় উপস্থিত ডাকসুর ভিপি নূরুল হক নূরকে উদ্দেশ করে বলেন, দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ, সাবেক ছাত্রনেতারা তোমাদের পাশে আছে। ডাকসুর ভিপি নূরুল হক নূর বলেন, নব্বইয়ের পর এ দেশে ছাত্ররাজনীতিতে কিচ্ছু হয়নি। শুধু দলীয় লেজুড়বৃত্তি ছাড়া। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে ছাত্রলীগ লাগামহীন হয়ে পড়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে হয়তো ছাত্রদলও এমন লাগামহীন হয়ে পড়ত। এতে আরও বক্তব্য দেন সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সিপিবির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, আবু সাঈদ খান প্রমুখ।