বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুই নারী খুনে দুজন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরের বাসায় গৃহকর্ত্রী ও গৃহকর্মী হত্যায় দুজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি-পশ্চিম)। তারা হলেন রমজান (২২) ও ইউসুফ (২৩)। গতকাল সন্ধ্যায় সদরঘাট থেকে তাদের আটক করা হয়। আজ আদালতে হাজির করে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার কথা রয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে লাশ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. কে এম মাইনুদ্দীন। ময়নাতদন্ত শেষে কে এম মাইনুদ্দীন বলেন, ‘দুজনকেই শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গৃহকর্ত্রী রহিমার গলার দুই পাশে কালো দাগ রয়েছে। সেখানে গলা টিপে ধরার দাগের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর সুমির শুধু গলার দুই পাশে দাগ রয়েছে। সে মৃত্যুর আগে ধর্ষিত হয়েছে কিনা জানার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ডিএনএর নমুনা ও ব্লাড সংগ্রহ করে প্যাথলজিতে পাঠানো হবে।’ পরে রহিমার মেয়ে রাশিদা তার মায়ের লাশ নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যান। আর গৃহকর্মী সুমির লাশ সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউই নিতে আসেননি বলে জানান মর্গসূত্র। ডিবি-পশ্চিম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহাদাত হোসেন জানান, টাকা-পয়সার লেনদেনের বাগ্বিতন্ডার জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মিরপুর-২ নম্বরের এ ব্লকের ২ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাড়ির চার তলার ফ্ল্যাট থেকে গৃহকর্ত্রী রহিমা (৬৫) ও গৃহকর্মী সুমির (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাতেই সিআইডির ক্রাইম সিনের আলামত সংগ্রহের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন রহিমা বেগম আর তার সঙ্গে থাকতেন গৃহকর্মী সুমি ও পালক পুত্র সোহেল (৩০)।

পুলিশের মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার খায়রুল আমিন জানান, সোহেল মূলত গাড়িচালক। সোহেলকে পালক পুত্র পরিচয় দিয়ে রহিমা বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিতেন। আর তারা ভাড়া বাসাতেই অনৈতিক কাজ চালাতেন। এ ক্ষেত্রে ছেলে আনা-নেওয়ার কাজে যুক্ত থাকতেন সোহেল। ঘটনার পরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোহেলকে আটক করা হয়। ডিবি পুলিশ সূত্র জানান, রমজান ও ইউসুফ ওই বাসায় গিয়েছিলেন অনৈতিক কাজ করার জন্য। তারা টাকা-পয়সা না দিয়েই চলে আসতে চাচ্ছিলেন। এ নিয়ে রহিমা আর সুমির সঙ্গে তাদের বাগ্বিতন্ডা হয়। রহিমা তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, টাকা না দিলে সমস্যা হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা প্রথমে শ্বাসরোধ করে সুমিকে মারেন, এরপর রহিমাকে মেরে পালিয়ে যান।

জানা গেছে, রহিমার প্রথম স্বামী মারা গেছেন। ওই সংসারে তার এক মেয়ে রয়েছেন। ওই মেয়ে স্বামীর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে থাকেন। এরপর রহিমা আরেক বিয়ে করেন। সেই স্বামী তার প্রথম স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কুমিল্লায় থাকেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসার জন্য চেন্নাইতে অবস্থান করছেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর