বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারতীয় মন্ত্রিসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল অনুমোদন

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

সংসদে উত্থাপনের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গতকাল বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল অনুমোদন করেছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে বিলটি তোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপির প্রায় সব মন্ত্রীই এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সর্বসম্মতিতেই বিলটি অনুমোদিত হয়।

সূত্র জানায়, সংসদের উচ্চকক্ষ লোকসভায় ৯ ডিসেম্বর বিলটি পেশ করা হতে পারে। সেখানে আলোচনার পর ভোটাভুটিতে পাস করানো হবে। এরপর ১০ ডিসেম্বর সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করার সম্ভাবনা। দুই সভায় বিলটি পাস হলে সেটি অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে বিলটি আইনে পরিণত হবে।  এই বিলের লক্ষ্যই হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা অমুসলিম (হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সি, জৈন) ধর্মাবলম্বী মানুষদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি স্পর্শকাতর এই বিলটি লোকসভায় পাস হয়ে গেলেও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় তা পাস করা সম্ভব হয়নি।

 বিরোধীদের দাবি ছিল ধর্মের ভিত্তিতে যেন নাগরিকত্ব দেওয়া না হয়। রাজ্যসভায় এই বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও বামেরা। সবশেষে বিলটিই বাতিল হয়ে যায়।

কিন্তু এবার সংসদের দুটি কক্ষেই তা ফের পাস করাতে বদ্ধপরিকর মোদি সরকার। কিন্তু লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে পাস হলেও রাজ্যসভায় প্রবল বাধার মুখে পড়তে পারে।

সম্প্রতি রাজ্যসভার অধিবেশনেই অমিত শাহ ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল নিয়ে আসা হবে।

গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর অভিমত জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের মতো নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলটি পাস করাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেদিন বিলটি সংসদে পেশ করবেন, সেদিন যেন সব সংসদ সদস্যই উপস্থিত থাকেন।

বিলের প্রতিবাদ : নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক জোট থেকে আগামী সোমবার বের হয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে আসাম গণপরিষদ। এ ছাড়া আসামে স্থানীয় সংগঠনগুলোর ডাকে গত মঙ্গলবার অর্ধদিবস বন্ধ পালিত হয়েছে। গতকালও আসাম সংখ্যালঘু সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই সংগঠনের সদস্যরা বিলটি পুড়িয়ে দেন। তারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কশপুত্তলিকা পোডায়। এ সময় আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালের কুশপুত্তলিকায়ও আগুন দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে বিলটি বাতিল করতে হবে, নইলে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর