সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সিনেমা দর্শক হারিয়েছে। কীভাবে দর্শককে আবারও হলে ফেরানো যায় সেজন্য অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০১৭ ও ২০১৮  প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী সম্মান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজেও হল মালিকদের সঙ্গে বসেছি। আমার মনে হয়, দর্শক ফেরাতে হলে সিনেমাকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশেষ করে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সিনেমা হল ডিজিটাল করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, এখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। তাদের জন্য সময় উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ ও ২০১৮ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ২০১৭ সালের আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করেন অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান ও অভিনেত্রী সুজাতা, ২০১৮ সালের জন্য এম আলমগীর ও প্রবীর কুমার মিত্র। মোট ২৮টি বিভাগে বিশিষ্ট নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান করেছে সরকার। পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান। তিনি দেশের চলচ্চিত্র তথা শিল্প সংস্কৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহ, ভালোবাসা ও অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিল্পকলার সব মাধ্যমের ভিতরে সবচেয়ে শক্তিশালী চলচ্চিত্র। এর মাধ্যমে মানুষের মনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এই চলচ্চিত্র। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে মানুষের জন্য। দেশে জঙ্গিবাদ আমরা প্রতিরোধ করছি। শুধু আইনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। চলচ্চিত্র এখানে বিরাট একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিকে আপনারা আরও বেশি নজর দেবেন। শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকটা ঘটনা-কাহিনি যখন তৈরি হবে সেটা যেন জীবনভিত্তিক হয়। দেশের অনেক শিল্পী বাইরে গিয়েও ভালো কাজ করছে। দেশেরও যেন তারা ভালো কাজ করে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায়। আমরা ভারতের প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগালকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছি। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। একটা সময় এই দেশে বঙ্গবন্ধুর নামও নেওয়া যেত না। আজকে জাতির পিতার নাম শুধু দেশে নয়, বিশ্বের দরবারে স্থান করে নিয়েছে। ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে জাতির পিতার জন্মদিন যৌথভাবে পালন করবে বলেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তিনি সিনেমার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আগামীতে আরও বড় পরিসরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান করা যায় কিনা সে ব্যাপারে ভাবা যেতে পারে। যেমন আমরা যাদের পুরস্কার প্রদান করছি, তাদের কাজের কিছু অংশ তুলে ধরা যেতে পারে এই অনুষ্ঠানে।’ ব্যস্ততার অভাবে সিনেমা দেখা হয় না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে বিদেশ যাওয়ার সময় বিমানে বসে দেশের সিনেমা দেখেন তিনি। দেশের সিনেমা তাকে মুগ্ধ করে। সে সঙ্গে বাংলাদেশের নাটককে বিশ্বমানের বলে ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। (বিস্তারিত ৮ এর পাতায় দেখুন)

সর্বশেষ খবর