সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বরিশালে তিন খুনে দুজন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের বানারীপাড়ায় একই বাড়িতে ট্রিপল মার্ডার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে র‌্যাব একটি ছুরি এবং ওই বাড়ি থেকে খোয়া যাওয়া স্বর্ণালঙ্কার ও তিনটি মুঠোফোন উদ্ধার করে। আটক ব্যক্তিরা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেও তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।  শনিবার সকালে বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর গ্রামে কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আবদুর রবের বাড়ি থেকে পুলিশ তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই দিন দুপুরে সলিয়াবাকপুর এলাকা থেকে জাকির হোসেন নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। জাকির একসময় ওই বাড়ির নির্মাণশ্রমিক ছিলেন। তিনি নিজেকে জিনের বাদশা বলে পরিচয় দিতেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শনিবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে জুয়েল হাওলাদার নামে আরেকজনকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আটক করে র‌্যাব-৮। ওই রাতেই নগরীর সাগরদী এলাকায় জাকিরের ভাড়া বাসা থেকে একটি ছুরি, তিনটি মুঠোফোন সেট এবং বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে র‌্যাব। র‌্যাব-৮-এর ১ নম্বর কোম্পানি কমান্ডার মেজর খান সজীবুল ইসলাম জানান, প্রবাসী আবদুর রবের বাড়িতে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজের সুবাদে যাতায়াত ছিল জাকিরের। তার স্ত্রী মিশুর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তার। সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলেন প্রবাসীর খালাতো ভাই ইউসুফ। এ কারণে তারা ইউসুফকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। শুক্রবার রাতে জাকির লোভ দেখিয়ে জুয়েলকে নিয়ে ওই বাড়ি যান। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার মুহম্মদ আবদুর রকিব জানান, আটক দুজন জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ ব্যাপারে এখনই বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি তিনি। অন্যদিকে প্রবাসীর স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশু ও তার ভাতিজি আছিয়া আক্তারকেও নজরদারিতে রাখার কথা জানিয়েছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর এলাকার কুয়েত প্রবাসী আবদুর রব হাওলাদারের বাড়িতে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতের পর যে কোনো সময় তিনজনকে হত্যা করা হয়। কথিত জিনের বাদশা জাকিরের সঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশুর অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলায় ওই রাতে প্রথমে ইউসুফকে পুকুর ঘাটে নিয়ে পা বেঁধে হত্যা করেন জাকির, জুয়েল ও মিশু। এ হত্যার ঘটনা দেখে ফেললে মিশুর শাশুড়ি মরিয়মকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তারা। মরিয়মকে হত্যার ঘটনাটি দেখে ফেললে হত্যা করা হয় শফিকুল আলমকে। আবদুর রব ১১ বছর ধরে কুয়েতে একটি মসজিদে ইমামতি করছেন। তার স্ত্রী ও সন্তান বাড়িতে থাকেন। নিহত তিনজনের মধ্যে ইউসুফ ও শফিকুল আলম দুই দিন আগে ওই বাড়িতে বেরাতে এসেছিলেন। নিহত তিনজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত শনিবার সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল তাদের মরদেহ বানারীপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ওই ঘটনায় শনিবার রাতে প্রবাসী রবের ভাই সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল।

সর্বশেষ খবর