বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উন্নত দেশগুলো চাইছে দায়মুক্তি

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন

নিজামুল হক বিপুল, মাদ্রিদ (স্পেন) থেকে

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের দ্বিতীয় সপ্তাহ গতকাল থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা। এতে বিশ্বের কমপক্ষে ২০০ রাষ্ট্রের মন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। আছেন বেশ কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন।

উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে লস অ্যান্ড ড্যামেজ, ফাইন্যান্স ও প্যারিস চুক্তির আর্টিকেল-৬। বাংলাদেশের লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে গত ১০ দিন ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হাফিজুল ইসলাম খান জানান, টানা আলোচনা চলছে। উন্নত বিশ্ব এ বিষয়ে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে চায় না। উল্টো তারা এখান  থেকে দায়মুক্তি চায়। প্যারিস চুক্তিতে লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে দায়মুক্তি বিষয়ক যে প্রভিশন দেওয়া আছে তারা ওটা জলবায়ু সংক্রান্ত মূল চুক্তিতে নিয়ে আসতে চায়। কিন্তু অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল ১৩৬টি দেশ এর বিরোধিতা করেছে। তারা বলছে, এটা করতে দেওয়া যাবে না। জলবায়ু  পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এখন এ নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা হবে।

জলবায়ুর কারণে ওয়ারশো মেকানিজম নামে ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত যে কমিটি রয়েছে সেই কমিটির রিভিউ হবে এবারের সম্মেলনে। উন্নত বিশ্ব একটা দুর্বল রিভিউ করত। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো বলছে রিভিউ হবে শক্তিশালী। কোনো ফাঁকফোকর রাখা যাবে না। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।

পর্যবেক্ষক হিসেবে আসা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ  দেওয়া আমিনুল হক বলেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ এ বছর রিভিউ হবে। এটি যেন এমনভাবে রিভিউ হয় যাতে বিপদাপন্ন দেশগুলোর প্রকৃত চাহিদা ও সেগুলো সমাধানের বিষয়সমূহ প্রতিফলিত হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এ বিষয়ে ধনী দেশগুলোর ভূমিকা অসঙ্গতিপূর্ণ। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আর্টিকেল-৬। এটি মূলত কীভাবে কার্বন নিঃসরণ কমানো হবে, যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নয়, কিংবা জলবায়ুর পরিবর্তনে কোনো ভূমিকা রাখছে না অথচ কার্বন নিঃসরণ কমাবে বা কমাচ্ছে তাদের কীভাবে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে  সেটি নিয়ে উন্নত বিশ্ব ও অনুন্নত বিশ্বের মধ্যে মেকানিজম ডেভেলপ করা নিয়ে আলোচনা চলছে।

ড. এম আসাদুজ্জামান বলেন, আর্টিকেল-৬ এ দুটি মার্কেট মেকানিজম,   কো-অপারেটিভ মেকানিজম, নন মার্কেট মেকানিজম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, উন্নত বিশ্ব উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বলছে, তোমাদের যা যা করতে বলা হয়েছিল  সেগুলো তোমরা কতটুকু বাস্তবায়ন করেছ সেটা আগে দেখাও। তিনি জানান, ইতিমধ্যে সাবসিডিয়ারি বডি অন সায়েন্টিফিক অ্যান্ড  টেকনিক্যাল অ্যাডভাইস (এসবিএসটিএ) থেকে কপকে বলা হয়েছে, আর্টিকেল-৬ বিষয়ে আমরা পরিপূর্ণ সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। আমাদের আরও সময় দিতে হবে। এই প্রস্তাব ইতিমধ্যে কপ-এর কাছে পাঠানো হয়েছে।

উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যদি তাদের সময় দেওয়া হয় তাহলে দিতে পারে। আবার তারা এমন সিদ্ধান্তও দিতে পারেন যে আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে কপ-এর যে সেশন হবে তার আগেই যেন তারা সিদ্ধান্তে আসে। নইলে আগামী বছর কপ-এর আগে কিছু হবে বলে মনে হয় না।

বাংলাদেশ দলের সদস্য ও আলোচক জিয়াউল হক বলেন, সাবসিডিয়ারি বডি ফর ইমপ্লিমেনটেশন (এসবিআই) এবং এসবিএসটিএ- এতে আলোচনা হয়েছে, আর্টিকেল-৬ এর আওতায় যে দুই ধরনের মার্কেট  মেকানিজম আছে, সেই দুটো থেকে আসা শেয়ার অব প্রসিড যেন অভিযোজনের জন্য দেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর